শিরোনাম

ইউরোপের লজ্জার দিন

নিউজ ডেস্ক: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে চুক্তির আওতায় সোমবার বহিষ্কৃত শরণার্থীদের বহনকারী তিনটি নৌকা তুরস্কে পৌঁছেছে। মানবাধিকার কর্মীরা ইউরোপের জন্য এ দিনকে লজ্জার বলে মন্তব্য করছেন।

ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই চুক্তির ফলে একই সময়ে সিরিয়ার ১৬ শরণার্থীকে নিয়ে একটি বিমান জার্মানির হ্যানোভারে অবতরণ করেছে। ইইউর সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষাকারী সংস্থা ফ্রন্টেক্স বলছে, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রায় দুইশ শরণার্থীকে সুষ্ঠুভাবে পাঠানো হয়েছে। এদের অধিকাংশই পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত।

শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই শরণার্থীদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। সোমবার`কে ইউরোপের `ঐতিহাসিক লজ্জার দিন` বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের শরণার্থী বিষয়ক আইনজীবী গেরি সিম্পসন। তিনি বলেছেন, এর মাধ্যমে নোংরা অভিবাসী চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

গেরি সিম্পসন বলেন, বিতাড়িত শরণার্থীদের যেখানে পাঠানো হচ্ছে, সেখানে তারা ন্যায্য আশ্রয় পাবে কিনা তা নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা রয়েছে। রাতের চোরের মতো, ভোরের অন্ধকারে ইইউ শরণার্থী চুক্তি করেছে। তিনি বলেন, তুরস্কে আশ্রয়ের কোনো প্রক্রিয়া নেই, সুতরাং বাংলাদেশ, পাকিস্তান অথবা অন্যান্য দেশের এসব শরণার্থী সেখানে যথাযথ নিরাপত্তা পাবে না।

শরণার্থীদের এই আইনজীবী বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের এক নম্বর উদ্বেগ আছে, সেটি হলো; ফেরত পাঠানো মানুষের নিরাপত্তা প্রয়োজন, কিন্তু অনিরাপদ একটি দেশে তাদের ফেরত পাঠিয়ে ইইউ ইউরোপীয় আইন লঙ্ঘন করেছে।

ইউরোপে আশ্রয় চেতে ব্যর্থ শরণার্থীদেরকে ইইউর বিভিন্ন দেশ থেকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। পরে এসব শরণার্থীকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে তুরস্ক।

তুরস্ক উপকূলের কাছে দিকলি বন্দরে শরণার্থীদের বহনকারী প্রথম নৌযানটি সোমবার পৌঁছেছে। এর পরপরই ২০২ শরণার্থীকে নিয়ে আরো দুটি নৌকা গ্রীক দ্বীপের লেসবস ও চিওস থেকে তুরস্কে গেছে। তুরস্কের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইন্ডিপেনডেন্টকে বলেন, ওই শরণার্থীদের মাঝে সিরিয়ার খুব কমসংখ্যকই রয়েছে।

এদিকে বার্তাসংস্থা এপি বলছে, শরণার্থীদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেবিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য জানায়নি আঙ্কারার কর্মকর্তারা। এর কয়েক ঘণ্টা আগে শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনার প্রতিবাদে চিওসে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়েছে। গত ২০ মার্চ শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো নিয়ে ইইউর সঙ্গে তুরস্কের চুক্তির পর গ্রিক দ্বীপে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার অভিবাসী ও শরণার্থীকে আটক করা হয়েছে।

গেরি সিম্পসন আরো বলেন, শরণার্থীরা মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের খুব সামান্য পরিমাণে খাবার, স্যানিটেশেন, ও আশ্রয়ের সুযোগ আছে। ২০১৬ সালে এসেও আধুনিক ইউরোপে খোলা আকাশের নিচে মানুষ ঘুমাচ্ছে।

সূত্র : জাগোনিউজ

basic-bank

Be the first to comment on "ইউরোপের লজ্জার দিন"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*