নিউজ ডেস্ক: আগামী সপ্তাহে পবিত্র ঈদ উল ফিতর। আর এ ঈদকে সামনে রেখে বাজারে টাকার চাহিদা বাড়লেও মুদ্রা বাজারে তেমন প্রভাব পড়েনি। ফলে স্বাভাবিক রয়েছে (আন্তঃব্যাংকিং) কলমানি বাজার।
সাধারণত ঈদের আগে বাড়তি কেনাকাটার জন্য টাকা তোলার হার বেড়ে যায় বলে ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকায় টান পড়ে। তখন কলমানি রেটও বেড়ে যায়। এসময় অধিকাংশ ব্যাংকের নগদ টাকার সংকটের কারণে কলমানি মার্কেটে সুদের হারও বাড়ে। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন।
ঈদের আগে নগদ টাকার চাহিদা বাড়লেও কলমানি মার্কেটে সুদের হার স্বাবাভিক রয়েছে। একদিকে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ মন্দা অন্যদিকে ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য থাকায় কলমানি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে নিজেদের মধ্যে অর্থ লেনদেন করেছে ব্যাংকগুলো। অবশ্য ব্যাংক থেকে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়েছে। ২৩ জুন (বৃহস্পতিবার) কলমানিতে মোট লেনদেন হয় ৫ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক টু ব্যাংক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা। আর ব্যাংক থেকে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা জানান, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। ফলে ঈদের আগে নগদ টাকার চাহিদা বাড়লেও কোনো সংকট সৃষ্টি হয়নি। তাই কলমানি স্থিতিশীল থাকবে।
এছাড়াও ঈদের বাড়তি কেনাকাটার জন্য গ্রাহকদের সুবিধার্থে সব ব্যাংকের এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এটিএম মেশিন, পস মেশিন এবং ই-পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে লেনদেন সার্বক্ষণিক সচল রাখতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর সাবেক চেয়ারম্যান ও মেঘনা ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক নূরুল আমিন বলেন, অবকাঠামোগত সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ প্রবাহ কমে গেছে। গ্রাহকের আমানতের টাকা বিনিয়োগ করতে না পারায় বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে এক লাখ কোটি টাকার ওপরে তারল্য রয়েছে। ফলে কলমানি রেটও স্থিতিশীল রয়েছে। ঈদের আগে টাকার চাহিদা বাড়লেও ব্যাংকগুলোতে তেমন সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে এক লাখ কোটি টাকার বেশি উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। এর মধ্যে অলস অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। বেশিরভাগ ব্যাংকের হাতেই এখন অলস অর্থ রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ থেকে ২৬ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে খাটানো রয়েছে।
তবে ব্যাংকের হাতে থাকা অলস অর্থ যাতে অনুৎপাদনশীল খাতে যেতে না পারে সেজন্য প্রতিদিনই বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে টাকা তুলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ঈদের আগে নগদ টাকার চাহিদা বাড়তে শুরু করায় বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে বাজার থেকে টাকা তোলা কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
Be the first to comment on "ঈদ বাজারেও স্বাভাবিক কলমানি রেট"