শিরোনাম

তিন মেডিক্যাল কলেজকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর তিনটি মেডিক্যাল কলেজকে শর্ত পূরণ করার জন্য তিন মাসের সময় বেঁধে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সময়ের মধ্যে কলেজের নামে নিজস্ব জমি নিবন্ধন করতে হবে। অন্যথায় কলেজের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম স্থগতি করে দেয়া হবে। কলেজ তিনটি হলো ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ এবং পপুলার মেডিক্যাল কলেজ । বুধবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ পরিচালনা নীতিমালা সংক্রান্ত সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় অন্যান্যের মাঝে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।  উক্ত তিন কলেজ ছাড়াও যেসব মেডিক্যাল কলেজ তাদের কলেজের নামে নিজস্ব জমি নিবন্ধন করে নাই তাদেরকেও আগামী তিন মাসের মধ্যে নিবন্ধন করার জন্য সভা থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, মেডিক্যাল শিক্ষার মানের বিষয়ে কোন আপোস হবে না। মেডিক্যাল শিক্ষা মানসম্মত না হলে যোগ্য ও মানসম্মত চিকিৎসক বের হবে না। এ বিষয়টির সঙ্গে মানুষের জীবন মরণের সম্পর্ক রয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ পরিচালনা নীতিমালার পূর্ণাঙ্গ শর্ত পুরণ করতেই হবে। অন্যথায় নীতিমালা লংঘনকারী কলেজের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দ্বিধা করব না। মেডিক্যাল কলেজসমূহ পরিদর্শন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহ্ম্মাদ নাসিম।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের কিছু সংখ্যক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষা ও গবেষণার মানসহ অনুমোদন নেয়ার সময় দেয়া  শর্তসমূহ পূর্ণাঙ্গ পূরণ না করার অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে দেশের সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। বিদ্যমান  আইন অনুযায়ী কোন ভাড়া বাড়ীতে কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন করা যাবে না। কলেজ একাডেমিক ভবন ও হাসপাতাল ভবন আলাদা থাকতে হবে। কোন অবস্থাতেই দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ধারনা গ্রহণযোগ্য হবে না। হাসপাতালে দরিদ্র জনগণের জন্য বিনা ভাড়ায় কমপক্ষে শতকরা ১০ ভাগ বেড সংরক্ষণসহ ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতে হবে। কলেজে ১ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে হাসপাতালে থাকতে হবে ৫টি শয্যা। সর্বনিম্ন ৫০ জন ছাত্রছাত্রীর আসনবিশিষ্ট বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের জন্য মহানগর এলাকায় কমপক্ষে কলেজের নামে দেড়  একর জমিতে অথবা নিজস্ব জমিতে কলেজের একাডেমিক ভবনের জন্য ১ লাখ বর্গফুট এবং হাসপাতাল ভবনের জন্য ১ লাখ বর্গফুট ফ্লোরস্পেস থাকতে হবে। আর মহানগরীর বাইরে ৩ একর নির্মাণযোগ্য জমিতে অথবা নিজস্ব জমিতে ১ লাখ বর্গফুট ফ্লোরস্পেস থাকতে হবে। তবে প্রারম্ভে একাডেমিক ও হাসপাতাল মিলে সর্বনিম্ন মোট ১ লাখ ২৫ হাজার বর্গফুট প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ ফ্লোর স্পেস থাকলে মেডিক্যাল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দেয়া যাবে। তবে পরবর্তী ২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ২ লাখ বর্গফুট ফ্লোরস্পেসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে হবে। আর বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল শুধুমাত্র নির্ধারিত প্লট/জমিতেই স্থাপন করতে হবে। কলেজের নামে কোন তফসিলি ব্যাংকে ১ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রাখতে হবে। কলেজ অনুমোদিত হলে স্থায়ী আমানতটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া এই অর্থ উত্তোলন বা ব্যয় করা যাবে না। তবে গর্ভনিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র বছরান্তে প্রাস্ত সূদ উত্তোলন করে কলেজের হিসাবে স্থানান্তর করতে পারবে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কমপক্ষে ২ বছর পূর্ব হতে প্রস্তাবিত ক্যাম্পাসে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোসমূহ নূন্যতম ২৫০ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল চালু থাকতে হবে। পরবর্তীতে চিকিৎসা শিক্ষার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ হাসপাতালে রূপান্তর করা যাবে। পরিদর্শনকালে কোন কলেজ যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে না বলে প্রতীয়মান হরে সংশ্লিষ্ট কলেজে আসন সংখ্যা হ্রাস বা ছাত্র ছাত্রী ভর্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করা যাবে। অনিয়ম গুরুতর অথচ সংশোধনযোগ্য না হলে প্রয়োজনে কলেজের অনুমোদন স্থগিত/বাতিল করা যাবে।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "তিন মেডিক্যাল কলেজকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আল্টিমেটাম"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*