নিউজ ডেস্ক: নাটোরের লালপুর নর্থবেঙ্গল চিনিকলে ৭৩ কোটি টাকার চলমান একটি প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩৭০ কোটি টাকায়। অনুমোদনের মাত্র দুই বছরের মাথায় প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ছে ৫ গুণ।
২০১৪ সালে এই প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। বাস্তবায়নে অগ্রগতি না খাতায় এ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে আজ মঙ্গলবার।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, নর্থবেঙ্গল চিনিকলে কো-জেনারেশন পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সুগার রিফাইনারি স্থাপন প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। নতুন প্রস্তাব অনুসারে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৮ সালের জুন নাগাদ শেষ করার টার্গেট নেয়া হচ্ছে।
চিনিকলে নতুন করে ডিস্টিলারি স্থাপন করে মোলাসেস (চিটাগুড়) থেকে বিভিন্ন ধরনের অ্যালকোহল উৎপাদন করা হবে। এ কারণে ৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকার প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকায়। অ্যালকোহলের নাম কী হবে তা এখনও ঠিক করা হয়নি। সবার পরামর্শে পরে উৎপাদিত অ্যালকোহলের নাম নির্ধারণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে শিল্প ও সমন্বয় উইংয়ের যুগ্ম-প্রধান কামরুন নাহার বলেন, চিনিকলটি অনেক পুরোনো হয়ে গেছে। আমরা বেশ কিছু কম্পোনেন্ট যোগ করতে যাচ্ছি। প্রকল্পের আওতায় জীবাশ্ম জ্বালানির (ফার্নেস অয়েল) পরিবর্তে উৎপাদিত বায়োগ্যাস বয়লার ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি সাশ্রয় করা হবে। সুগার মিলের প্রেস মাড ও ডিস্টিলারির বর্জ্য স্পেন্ট ওয়াশ ব্যবহার করে জৈবসার উৎপাদন করা হবে। পরিবেশ দূষণ রোধ করে জমির উর্বরতা বৃদ্ধিরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
বছরে ৯০ লাখ লিটার অ্যালকোহল উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)। এ অ্যালকোহল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করে প্রায় শত কোটি টাকা আয় করা হবে। এছাড়া চিনিকলের বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় করে বছরে ৪০ হাজার মেট্রিক টন সাদা চিনি ও বায়োকম্পোস্ট (জৈব সার) বিক্রি করে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে।
বিএসএফআইসি সূত্র জানায়, চিনিকলে সুগার রিফাইনারি স্থাপন করে আমদানিকৃত ‘র’ সুগার থেকে বছরে ৪০ হাজার মেট্রিক টন সাদা চিনি উৎপাদন করা হবে। কো-জেনারেশন পদ্ধতিতে নর্থবেঙ্গল চিনিকলে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে মিলের নিজস্ব প্রয়োজনে ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হবে। বাকি ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
Be the first to comment on "নর্থবেঙ্গল চিনিকল : ৭৩ কোটি টাকার প্রকল্প এক লাফে ৩৭০ কোটি"