নিউজ ডেস্ক: ‘আপনার পুলিশকে একটু থামান। পুলিশ একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছে মনে হয়।’ কথাগুলো বলছিলেন বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি অসীম রঞ্জন বডুয়া। বুধবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সঙ্গে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের মতবিনিময় সভায় এভাবেই বলেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, ১৪ দলীয় মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যা ও জঙ্গিবাদ নিয়ে উৎকণ্ঠা দূরীকরণীয় বিষয়ে এই মতবিনিময় সভার করে কেন্দ্রীয় ১৪ দল। সভায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলের অন্যান্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি অসীম রঞ্জন বডুয়া বলেন, ‘এখানে অনেকে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। আমি বলবো, আমরা আসলেই ভীত। এই ভীতি থেকে উদ্ধারের জন্য, সাহস দেয়ার ১৪ দলীয় জোটের নেতারা আজকে আমাদের ডেকেছেন।’
এ সময় একটু ক্ষোভ প্রকাশ করে ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনার পুলিশকে একটু থামান। পুলিশ একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছে মনে হয়।’
অসীম রঞ্জন বড়ুয়া বলেন, ‘গত দুই-তিন আগে আমাদের কমিউনিটির দুটি ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল যারা ছোটখাটো ব্যবসা করে। তাদের মালিবাগ নিয়ে গেল। কোর্টে নিয়ে যাওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে একলাখ টাকা চাঁদা চাইলো।’
তিনি বলেন, ‘এরপর কমতে কমতে ৫০ হাজার টাকা চাইলো। সর্বশেষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে আমাদের ছেলে দুটিকে ছাড়িয়ে নিয়ে আনলেন আমাদের নেতারা।’
বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি বলেন, ‘পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে আমরা ছোট সম্প্রদায়ের লোকরা বেশি ভয় পাই। একে তো গুপ্তহত্যার ভয়, তার উপর পুলিশের ভয়।
নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে আবেদন করবো, বিষয়টি আপনারা বিবেচনা করবেন। যেন পরে পুলিশের উপদ্রব না হয়।’ এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিন, আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আপনারা যদি এ বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ দেন, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেবো।’
তিনি বলেন, আমরা চাই জনগণ যেন শান্তি, নিরাপদ এবং নির্ভয়ে থাকতে পারেন। সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যেন ঐক্যবদ্ধভাবে স্বস্তিতে থাকতে পারেন তা নিশ্চিত করায় আমাদের দায়িত্ব।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু, উপ-দফতর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম আমিন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাসদ (একাংশ) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাৎ হোসেন, বাসদের রেজাউর রশিদ খান প্রমুখ।
Be the first to comment on "‘পুলিশকে একটু থামান, বেশি বাড়াবাড়ি করছে মনে হয়’"