নিউজ ডেস্ক : কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জের ধরে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারা এলাকায় ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় আজ বুধবার বাঁশখালী ছাত্র-ঐক্য ফোরামের ডাকা হরতালে সাড়া দেয়নি জনগণ। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সম্মুখে মানববন্ধন হতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হরতালের এই ঘোষণা আসছিল। বাঁশখালীর সর্বত্রের জনগণ এই হরতালকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। যথরীতি অফিস আদালত খোলা ছিল। সর্বোপরি স্থানীয়রা এই হরতালকে প্রহসনের হরতাল বলে আখ্যায়িত করেছে। অপরদিকে কয়লা বিদ্যুৎ নির্মাণ বিরোধী সংগঠনের আহব্বায়ক বিএনপি নেতা লেয়াকত আলী তালুকদার এর ফাঁসির দাবীতে উপজেলা সদরে মানবন্ধন করেছে কয়লা বিদ্যুৎ সমর্থিত পক্ষ। মানববন্ধন হতে এই বিএনপি নেতাকে সংঘর্ষের মূল নায়ক হিসেবে উল্লেখ করে অনতিবিলম্বে তাকে গ্রেফতার পূর্বক তার ফাঁসির দাবী জানিয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ৪ জন সাধারণ মানুষের দায়ভার এই নেতাকে বহন করতে হবে বলে মানববন্ধনকারীরা মানববন্ধনে তুলে ধরেছে। তাছাড়া এই নেতা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প হতে ১০ কোটি টাকা চাঁদা চেয়েছিল।
চাঁদা না পেয়ে সাধারণ জনগণকে পুঁজি করে এই হত্যাযজ্ঞে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে তারা জানায়। গন্ডামারা এলাকায় নিহতদের জানাযায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি আমির খসরু মাহমুদ উপস্থিত হয়ে খালেদা জিয়ার প্রতিনিধিত্ব করছে বলে জানাযায় ঘোষণা দিয়েছে। অপরদিকে জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইট হতে এই ঘটনায় সরকারের নির্মম হত্যাকান্ড বলে বিবৃতি প্রদান করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ও জামায়াতের ওয়েবসাইটে এই ঘটনাকে বর্বরোচিত হামলা বলে বিবৃতি প্রদান করা কি প্রমাণ করে না সংঘর্ষের ইন্ধনে রয়েছে এই সংগঠনগুলো? বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত।
আইন শৃঙ্খলা অবনতি এড়াতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ এখনও অবস্থান করছে। বুধবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক দাবী করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চট্টগ্রাম দক্ষিণ হাবিবুর রহমান জনকন্ঠকে জানান, কতিপয় ব্যক্তি তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সংঘর্ষের ঘটনায় ইন্ধন দিয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সর্বোপরি তদন্তে সাপেক্ষে বেরিয়ে আসবে এই ঘটনার মূল রহস্য। উল্লেখ্য, বাঁশখালীর গন্ডামারা এলাকায় এস.আলম গ্রুপ ও চায়না কোম্পানী যৌথ উদ্যোগে ২৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩২০ মেঘাওয়াট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছিল। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রনির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকায় সোমবার ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন নিহত ও পুলিশের ১৩ সদস্য সহ কমপক্ষে আহত হয়েছে ৬০ জন।

Be the first to comment on "বাঁশখালী রক্তাক্তের গডফাদার বিএনপি নেতা লেয়াকত এর ফাঁসির দাবীতে মাবনবন্ধন"