নিউজ ডেস্ক : একের পর এক লেখক, ব্লগার, অনলাইন এক্টিভিস্ট, শিক্ষক খুনের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, বাংলাদেশে ‘এমন এক পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে, যেখানে দুর্বৃত্তরা অপরাধ করেও ‘পার পেয়ে’ যাচ্ছে। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বার্নিকাট।
গত শনি থেকে সোমবারের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক, ইউএসএআইডির এক কর্মী ও তার এক বন্ধুকে একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে দুর্বৃত্তরা অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। “যে ধরনের হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটছে তা পুলিশ বা সরকারের একার পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়, কারও পক্ষেই একা তা সম্ভব না। জয়েন্টলি কাজ করতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র কাজ করতে চাচ্ছে।”
সোমবার বিকালে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় বাসায় ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হয় ইউএসএআইডি বাংলাদেশের কর্মসূচি কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়কে।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অ্যাসিসটেন্ট জুলহাজ সমকামী ও হিজড়া অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত সাময়িকী ‘রূপবান’ সম্পাদনায় যুক্ত ছিলেন। এর দুইদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে তার বাড়ির কাছে একই কায়দায় হত্যা করা হয়। জুলহাজকে হত্যার নিন্দা জানিয়ে এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এ ঘটনার তদন্তে সহযোগিতারও প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত বৈঠকে পুলিশের ভূমিকার ‘প্রশংসাই করেছেন’। “উনি (বার্নিকাট) আপনাদের কী বলেছেন আমি দেখেনি। কিন্তু তিনি আমার কাছে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।”
সোমবার কলাবাগানে জোড়া খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন, ঘটনার পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেই দিন পুলিশ একজনকে জাপটে ধরেছিল কিন্তু অন্য দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে আহত করে। পুলিশ ফায়ার ওপেন করেছিল। কিন্তু রাস্তায় মানুষ থাকায় দ্বিতীয় ফায়ার করতে পারেনি পুলিশ।
“আমরা (বার্নিকাটকে) বলেছি, সারা বিশ্বে খুন, হত্যা হচ্ছে। আপনাদের দেশেও হচ্ছে। দুইজন নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। “আমরা বলেছি, আসুন আমরা একসাথে মোকাবেলা করি। কোনো ইনফরমেশন থাকলে আমাদের দিন, পুলিশের যে ইউনিটগুলো আমাদের আছে, সেগুলোর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করুন।” তথ্য বিনিময়ের এই অনুরোধ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ‘সাদরে গ্রহণ করেছেন’ বলেও সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রী।
বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশ আমাদের শক্তিশালী অংশীদার। হত্যা-সন্ত্রাসের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের কাছে যেসব তথ্য-উপাত্ত আছে, সেগুলো আমরা বাংলাদেশকে দেব। তদন্তে একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের যে অভিজ্ঞতা আছে সেগুলো শেয়ার করব। বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা তথ্য আদান-প্রদান করব। আমরা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চাই বলে জানান মার্কিন এ রাষ্ট্রদূত।

Be the first to comment on "বাংলাদেশে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা: বার্নিকাট"