নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়ায় আবারো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে যে ভাবেই হোক ওই প্রতিবেদন যোগাড় করে আগামী বৈঠকে তা উত্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়। কমিটির সভাপতি শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া, আবদুর রউফ ও অ্যাডভোকেট নাভানা আক্তার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, আগের দুইটি বৈঠকের ধারাবাহিকতায় আজকের বৈঠকেও ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে তদন্ত প্রতিবেদনটি উত্থাপনের কথা থাকলেও তা উত্থাপিত হয়নি। এনিয়ে কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানতে চান, বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেদনটি কেন উত্থাপন করা হচ্ছে না? জাবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনটি অর্থ মন্ত্রীর কাছে রয়েছে। তিনি এই মুহুর্তে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে আগ্রহী নন। এরপর কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তিনি ভালো করেই জানেন সংসদীয় কমিটিকে এটা দেখাতে হবে। তাই যে ভাবেই হোক প্রতিবেদনটি যোগাড় করে পরবর্তী বৈঠকে উত্থাপনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শওকত আলী সাংবাদিকদের বলেন, রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে কমিটির বৈঠকে আবারো আলোচনা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা প্রতিবেদন না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পরবর্তী বৈঠকে প্রতিবেদন উত্থাপন করতে বলা হয়েছে।
বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের খোয়া যাওয়া অর্থ উদ্ধার ত্বরান্বিত করতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল এখন ফিলিপাইন সফরে আছেন। খোয়া যাওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৫ মিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে। বাকি ৬৬ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৩৪ মিলিয়ন পাইপ লাইনে আছে। আর বাকি ৩২ মিলিয়ন ডলারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শেষে কমিটির পক্ষ থেকে ওই ৩২ মিলিয়ন ডলার চিহ্নিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের রিজার্ভের আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সে সরিয়ে নেওয়া হয়। যাকে বিশ্বের অন্যতম বড় সাইবার চুরির ঘটনা বলা হচ্ছে। এ ঘটনায় সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত ৩০ মে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু প্রতিবেদনটি এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
Be the first to comment on "রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন : ফের ক্ষোভ সংসদীয় কমিটির"