নিউজ ডেস্ক॥ হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পার-মল্লিকপুর গ্রামের বাড়ি ছাড়া দুই শতাধিক পরিবার ২৭৫ দিন পর ফিরলো নিজ নিজ বাড়িতে। দীর্ঘদিন পর পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পেরে তারা সবাই খুশি। এ উপলক্ষে গত শনিবার বিকালে পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে পার-মল্লিকপুর গ্রামের বিবাদমান বিরোধ নিরসনকল্পে স্থানীয় ফুটবল মাঠে এক সম্প্রীতির বন্ধন বিষয়ক সভার আয়োজন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শামসুল হক কচির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ জসিমউদ্দিন পিপিএম,পুলিশ সুপারের সহ ধর্মীনি নাহিদা চৌধুরী সুমী,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরফুদ্দিন, লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এম আরাফাত হোসেন, লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রবীর কুমার বিশ্বাস, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, মল্লিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান শিকদার মোস্তফা কামাল, সাবেক চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান, ইউপি সদস্য উজ্বল ঠাকুর ও সাবেক ইউপি সদস্য হিমায়েত হোসেন হিমু।
উল্লেখ্য উপজেলার পার-মল্লিকপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে হেমায়েত হোসেন হিমু ও ইউপি সদস্য উজ্জ্বল ঠাকুর গ্রুপের মধ্যে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ২১এপ্রিল এক সংঘর্ষে উজ্জ্বল ঠাকুর পক্ষীয় খায়ের মৃধা নিহত হয়। এ ঘটনায় রেক্সোনা বেগম বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় ৫১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলে আসামী পক্ষের ২শ টি পরিবার বাড়ি ছাড়া হয়ে পড়ে। আসামী পক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর এবং মূল্যবান আসবাবপত্র, গবাদী পশু ও ফসল লুটপাট করা হয়। ভুক্তভোগী এসব পরিবারের সদস্যরা আত্মীয় স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে বসবাস করে আসছিলো। দীর্ঘদিন পর এসব পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনের উদ্যোগে বাড়িতে ফিরতে পারায় তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অনুরুপ ২০১৫ সালের ১৬ আগষ্ট সকালে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম মৃধা ও তার চাচাতো ভাই ইকবাল হোসেন মৃধা, প্রতিপক্ষ হিমায়েত হোসেন হিমু গ্রুপের লোকের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়। এ ঘটনায় রুকসানা বেগম বাদী হয়ে ৪৫ জনকে আসামী করে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা করেন। হত্যাকান্ডের পর থেকেই ওই গ্রামে বাড়ীঘর ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট, মারধোর, ক্ষেতের ফসল,বৃক্ষাদি কর্তন, গবাদি পশু চুরি ও ধর্ষনসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের তান্ডবলীলা চালায়। তখন উজ্জল ঠাকুর গ্রুপের প্রায় দু’শ পরিবার ২৫২ দিন বাড়ি ছাড়া হয়ে পড়ে। অবশেষে ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর নড়াইলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান,উভয় পক্ষকে ডেকে শান্তী বৈঠক করে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পথ সুগম করেন।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার জসিমউদ্দিন জানান, উভয় পক্ষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পরে এ জন্য আজকের এই সম্প্রীতির বন্ধন করে দু’পক্ষের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।
লোহাগড়ায় ২৭৫ দিন পর বাড়ি ফিরলো দু’শ পরিবার

Be the first to comment on "লোহাগড়ায় ২৭৫ দিন পর বাড়ি ফিরলো দু’শ পরিবার"