শিরোনাম

হোয়াট্সঅ্যাপেও বিপদ, সতর্ক করছে পুলিশ

নিউজ ডেস্ক : ফেসবুকে এক তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল বালিগঞ্জের কলেজপড়ুয়া ছাত্রীর। ঘনিষ্ঠতা বাড়লে ফোন নম্বর নিয়ে হোয়্যাট্‌সঅ্যাপেও ‘চ্যাট’ করা শুরু করেন তাঁরা। এমন চলতে চলতেই এক দিন ওই কলেজছাত্রীর ফোনে এসএমএসে একটি ‘কোড’ আসে। হোয়্যাট্‌সঅ্যাপে সেই ‘কোড’ জানতে চান ওই ফেসবুক-বন্ধু। ছাত্রী তা দিয়েও দেন।
ঘটনার সূত্রপাত এর পরেই। কিছু ক্ষণের মধ্যেই হোয়্যাট্‌সঅ্যাপ বন্ধ হয়ে যায় ওই ছাত্রীর। আর তার পরেই পরিচিতদের কাছ থেকে একের পর এক ফোন— ওই ছাত্রী নাকি হোয়্যাট্‌সঅ্যাপে নিজের অশ্লীল ছবি পাঠিয়েছেন পরিচিতদের!
সম্প্রতি কালীঘাটের এক ব্যক্তির অভিজ্ঞতা আবার একটু আলাদা। হঠাৎই হোয়্যাট্‌সঅ্যাপে তাঁর ডেবিট কার্ডের পিন, সিভিভি নম্বর, কার্ড নম্বর জানতে চান এক পরিচিত। সন্দেহ হওয়ায় সেই ব্যক্তিকে ফোন করেন কালীঘাটের ওই বাসিন্দা। জানতে পারেন, তাঁর পরিচিতের হোয়্যাট্‌সঅ্যাপ ‘বিকল’ হয়ে গিয়েছে!
পুলিশ বলছে, সাইবার জালিয়াতির ক্ষেত্রে এত দিন ই-মেল, ফেসবুকের সাহায্য নিত জালিয়াতেরা। সেই জাল এ বার ছড়াচ্ছে হোয়্যাট্‌সঅ্যাপেও। বালিগঞ্জের ওই কলেজছাত্রী লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলি‌শ জানতে পারে, ওই ছাত্রীর ফেসবুক-বান্ধবী আসলে এক যুবক। কিন্তু গোয়েন্দারা তাঁকে ধরতে পারেননি।
সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, স্মার্টফোনের যুগে মেসেজ অ্যাপ হিসেবে হোয়্যাট্‌সঅ্যাপ এখন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তাই লোক ঠকাতে এই মাধ্যমকেই হাতিয়ার করছে জালিয়াতেরা। তার উপরে এই অ্যাপ মারফত নিজের পরিচয় গোপনও রাখা যায়। হোয়্যাট্‌সঅ্যাপ ব্যবহার করতে চাই ইন্টারনেট সংযোগ। ফলে একটি সিম ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খোলার পরে সিমের বদলে ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমেও এই অ্যাপ ব্যবহার করা সম্ভব। তার ফলে অন্যের হোয়্যাট্‌সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে জালিয়াতি করাটাও তুলনামূলক ভাবে সহজ। সাইবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের মতে, এই ধরনের জালিয়াতির আশঙ্কা এড়াতে নম্বর এক রেখে হোয়্যাটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট অন্য ফোনে বদলানোর সময় যে মেসেজ আসে, তাতে ‘কোডের’ সঙ্গে সতর্কবার্তা দেওয়া জরুরি।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের অনেকে বলছেন, সাইবার অপরাধ ঠেকাতে গেলে ব্যবহারকারীদের সতর্কতা বেশি জরুরি। কারণ, সাইবার মাধ্যমের সুরক্ষার বেড়াজাল পেরোতে ‘কোড’ বা ‘পিন’ প্রয়োজন হয়। বেশির ভাগ সময়ে ব্যবহারকারীরা নিজেরাই তা জালিয়াতদের হাতে তুলে দেন। পরবর্তী কালে জালিয়াতি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলে ধরপাক়ড় হয় বটে। কিন্তু ওই ব্যবহারকারীর সম্মানহানি বা আর্থিক ক্ষতির কতটা মেরামত করা যায়, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে তদন্তকারীদের একাংশেরই। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ বলছেন, ‘‘অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করি। কিন্তু এই বিপদ এড়াতে মানুষেরও সচেতন হওয়া উচিত।’’

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "হোয়াট্সঅ্যাপেও বিপদ, সতর্ক করছে পুলিশ"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*