নিউজ ডেস্ক: কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের পড়ে সম্পূর্ণা। পড়াশোনার পাশাপাশি। ভাল নাটকও করে। সামনেই কলেজ সোশ্যাল আর তার জন্যই সকলে মিলে ওকে ধরেছে যে ‘ওথেলো’র ডেসডিমোনা ওকেই হতে হবে। তা সে ঠিক আছে, রিহার্সাল চলল। তবে চমকটা অপেক্ষা করছিল ফাইনাল রিহার্সালের দিনের জন্য। সেদিন ডেসডিমোনার কস্টিউম দেখে ওর চক্ষু চড়কগাছ। না, গাউনটা নজরকাড়া। সমস্যাটা হল ড্রেসের অফ সোলডার কাটটা। ‘এই মরেছে! এর সঙ্গে কী ধরনের ব্রা পরব?’ এই প্রশ্নটি রাতের ঘুম কেড়ে নিল বেচারি সম্পূর্ণা। ওদিকে ক্লাস এইটের কলির সমস্যাটা আবার অন্যরকম। পিটি ক্লাসে সেদিন ম্যাম ওকে ডেকে বলেছে যে ওর চেহারার গঠন এখন পালটেছে তাই ওর অন্তবার্সের ক্ষেত্রেও একটা বদল আনা এখন প্রয়োজন। কী বদল আনবে? কেমন হবে সেই বদল? কে বলে দেবে ওকে সেই বদলের রাস্তা? এই ভাবতে-ভাবতে প্রায় রাতের ঘুম বন্ধ হওয়ার জোগাড় কলিরও। বলি কী রাতের ঘুম এত সহজে হারিয়ে ফেললে চলবে? শুধু সম্পূর্ণা বা কলি নয় অন্তর্বাস সংক্রান্ত গুচ্ছ-গুচ্ছ কৌতূহল রয়েছে ঋদ্ধি, মোনাদের মনেও… সব প্রশ্নের উত্তর ছাড়াও, অন্তর্বাস সংক্রান্ত জরুরি ফ্যাক্ট্স আর ইনফো জানতে পড়তে থাকো…
গোড়ার কথা…
সকলের বডি শেপ এক হয় না। বডি শেপ অনুযায়ী অন্তবার্স বেছে নেওয়াটা সবচেয়ে জরুরি। বিশেষ করে অন্তর্বাসের ক্ষেত্রে তো এটা প্রথম এবং শেষ কথা। টিনেজ লাইফের শুরুর পথটা খুব মসৃণ হয় না সকলের জন্য। বয়ফ্রেন্ড, পিম্পল্স, পরীক্ষার পাশাপাশি জীবন জুড়ে থাকে হাজার একটা সমস্যা… তার মধ্যে কিছু সমস্যা শেয়ার করা যায় আর কিছু নয়। তবে অন্তর্বাস সংক্রান্ত সমস্যাগুলি তাই বেশিরভাগ সময়েই মনের সেফে লক থেকে যায়। সেই সেফ খুললে প্রথম যে সমস্যাটা ঝপ করে লাফিয়ে পড়ে তা হল বয়ঃসন্ধির শুরু থেকে কী ব্রা পরা উচিত আমাদের? উত্তরটা হল সাপোর্টিভ ব্রা। এই ব্রা-এ থাকে তুলনায় মোটা স্ট্র্যাপ্স এবং কাপ সাইজ় পুরো ব্রেস্টের ভরপুর কভারেজ দেয়। তাই শুধু শুরুতেই নয় সারা জীবনই এই ব্রা ওয়াড্রর্বে থাকা কিন্তু মাস্ট। রোজকার ব্যবহারের জন্য এই ব্রা-ই আইডিয়াল। ডান্স করো বা কঠিন কোনও ফিজ়িক্যাল অ্যাক্টিভিটি তোমাকে পুরোপুরি সাপোর্ট দিতে তৈরি এই বিশেষ অন্তর্বাস। ব্রা-এর ক্ষেত্রে সঠিক কাপ সাইজ় সঠিক না হলে প্রচণ্ড বিপদ! আর বিপদের তালিকায় প্রথম নামটি হল ‘স্যাগিং ব্রেস্ট’ বা ব্রেস্ট ঝুলে পড়ার সমস্যা। যখন দেখবে বসলে পরেও ব্রা-এর পজ়িশনে কোনও হের ফের হচ্ছে না তখন বুঝতে হবে ফিটটা ঠিক আছে। আর তা হলেই মহাবিপদ! যার থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সঠিক কাপ সাইজ় বেছে নেওয়া। নিশ্চয়ই মনে এল সেটা আবার কী করব? চাপ নিয়ো না বরং পড়ে নাও….
কাপ-এ খাপ…
ফুটওয়্যার কিনতে গেলে আমরা সবসময় দেখে নিই তার ফিট এবং সাইজ় আমার পায়ের সঙ্গে খাপ খাচ্ছে কি না। কি তাই তো? যদি তা হয় তাহলেই সেটা আমাদের ওয়ার্ড্রবে জায়গা করে নিতে পারে। সেই একই নিয়ম বর্তায় অন্তবার্সের ক্ষেত্রেও। বিশেষ করে ব্রা-এর ক্ষেত্রে কাপ সাইজ়টা খুব জরুরি। নিজের কাপ সাইজ় বুঝে নিতে কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পার। ব্রেস্টের কাপ সাইজ় মোটের উপর ভাগ হয় A, B, C, D মাপে। মোটামুটি ১৭.৮ থেকে ১৯.১ সেন্টিমিটারের ব্রেস্ট কাপ ‘A’ সাইজ়ের মধ্যে পড়ে। তেমনই ২০.৩ থেকে ২১.৬ সেন্টিমিটারকে ফেলা হয় ‘B’ কাপের আওতায়। ২২.৯ থেকে ২৪.১ সেন্টিমিটারকে বলা হয় কাপ সাইজ় ‘C’। ২৫.৪ থেকে ২৬.৭ সেন্টিমিটার হল ‘D’ কাপ। তবে এর উপরের কাপ সাইজ় প্রয়োজন হলে DD কাপ ট্রাই করা যেতে পারে। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে ব্র্যান্ড অনুযায়ী তোমার কাপ সাইজ়ে একটু হলেও হেরফের হতে পারে। মানে এক ব্র্যান্ডের ‘B’ সাইজ় তোমার ফিট হলে অন্য ব্র্যান্ডে শিফ্ট করলে যদি সেখানের ‘C’ সাইজ়টা তোমার বেশি ফিট করে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
ফিট হ্যায় তো হিট হ্যায়!
সঠিক কাপ সাইজ় বাছার পালা সাঙ্গ হলে নজর দিতে হবে আরও একটা জরুরি দিকে। ব্রা-র ফিট ঠিক না থাকলে কিন্তু বিষম বেকায়দায় পড়তে হবে। তবে কয়েকটা বিষয় মিলিয়ে নিলে আর কোনও চাপ নেই। কী কী মেলাবে? রইল তারই চেকলিস্ট…
আন্ডারব্যান্ডটা পিঠের উপর স্বচ্ছন্দ থাকে যেন। আর হুকের জায়গাটা থাকতে হবে পিঠের মধ্যিখানে। এরপর হাত তুলে দেখতে হবে ব্রা-এর পজ়িশনে কোনও হেরফের হল কি না। যদি হয় তাহলে ফিট ঠিক নেই। ব্যান্ডটি তোমার প্রয়োজনের তুলনায় বড়।
যদি অন্তর্বাসটিতে আন্ডারওয়্যারের ব্যবহার থাকে তাহলে দেখতে হবে সেটি ত্বকের উপর স্বচ্ছন্দে বসছে কি না। যদি কোনও রকমের খোঁচা লাগে তাহলে ব্যাপারটা খুব বিপজ্জনক।
স্ট্র্যাপস ইনারওয়্যারের ক্ষেত্রে খুব জরুরি একটা অংশ। প্রায় ২০ শতাংশ সাপোর্ট দেয় এটা ব্রেস্টকে। তাই বিশেষজ্ঞরা বেশিরভাগ সময় চওড়া স্ট্র্যাপ্স পরার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি ইলাস্টিকের ধরন যেন ভাল হয় এবং তা যেন ত্বকের উপর কোনও ছাপ না ফেলে।
ব্রা-এ মাঝের সিমটা যেন বুকের ঠিক মাঝখানে বসে থাকে। আর স্ট্র্যাপসগুলো সমান্তরাল থাকতে হবে। তা যদি না হয় তাহলে। তাহলে সাইজ়টা তোমার দন্য ছোট।
সবশেষে দেখে নিতে হবে ব্রা-এর কাপের উপর দিয়ে কভারেজের উপর দিয়ে ব্রেস্টটা স্পিল করছে কি না? যদি তা না হয় তাহলে ফিটটা তোমার জন্য একদম পারফেক্ট!
পাঁচটা Must হ্যাভ্স!
অফ শোলডার ড্রেস, হলটার নেক ব্লাউজ় বা টেনিস টপ এগুলোর প্রায় সকলের ওয়াড্রর্বেই রয়েছে। তা বুঝলাম! তবে কোন ড্রেসের সঙ্গে কোন অন্তর্বাসটি না হলেই নয় তা জানা আছে কি বন্ধু? সবসময় পরার জন্য সাপোর্টিভ ব্রা বেস্ট হলেও এটা তো মানতেই হবে যে পোশাকের স্টাইল বা কাট অনুযায়ী বদলে যায় অন্তর্বাসের চাহিদা। তাই এখনই দেখে নাও এই দরকারি পাঁচ ধরনের ব্রা-এর মধ্যে কোনটা তোমার ওয়াড্রর্বে মিসিং…..
টি-শার্ট ব্রা
কলেজ হোক বা টিউশন বা এমনকী ডেট বেশিরভাগ টিনেজারদের ক্ষেত্রে টি-শার্টই হল এখন ফার্স্ট চয়েস। তাই তার তলায় পরার জন্য টি-শার্ট ব্রা-ই হল পারফেক্ট। ফর্ম ফিটিং হয় তাই টাইট টি-শার্টের নীচে পরার জন্যেও ভাল অপশন। অন্য কোনও টাইট ড্রেসের নীচেও এই ব্রা পরা যেতে পারে।
স্পোর্টস ব্রা
স্পোর্টস, সুইমিং, ডান্স ক্লাস… দিনভর বিভিন্ন ধরনের ফিজ়িক্যাল অ্যাক্টিভিটি ১৯ ২০-দের কাছে নতুন কিছু নয়। তবে এই অ্যাক্টিভিটিগুলোর প্রভাব যাতে ব্রেস্টের উপর না পড়ে তার জন্য দরকার একটা ভাল স্পোর্টস ব্রা। বাজারে দু’রকম স্পোর্টস ব্রা পাওয়া যায়। একটা যা স্ট্রেচ ফ্যাব্রিক দিয়ে বানানো। এতে চেস্ট কমপ্রেশন টেকিনিক ব্যবহার করা হয়। আর একটায় হালকা মোল্ডের কাপ ব্যবহার করা হয়।
ব্যাকলেস ব্রা
সামনেই একটা জম্পেশ বিয়েবাড়ি। সেখানে পড়বে বলে ব্যাকলেস ব্লাউজ় বানিয়েছ শখ করে তবে সঙ্গে ব্যাকলেস ব্রা না রাখলে যে স্টাইলটি মাঠেই মারা যাবে। বাজারে অনেকরকম ব্যাকলেস ব্রা-এর চল রয়েছে। পপুলার অপশন গুলো হল সিলিকন, নিপ্ল কভার ইত্যাদি। তবে যেহেতু এই ব্রা-এর ক্ষেত্রে পিছন থেকে কোন সাপোর্ট সিস্টেম (ব্যান্ড) থাকে না তাই বিশেষজ্ঞদের মতে এটা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভাল। কারণ এতে ব্রেস্ট টিস্যুর ক্ষতি হতে পারে যার ফলে স্যাগিং অবধারিত।
কনভার্টিবল ব্রা
শাড়ি, টি-শার্ট তো হল। তবে রেসারব্যাক গেঞ্জি বা হাই ফ্যাশন ড্রেসটার সঙ্গে পরার জন্য অন্তর্বাসের দুনিয়ায় দোসরের খোঁজে থাকলে এই কনভার্টিবল ব্রা কালেকশনে না থাকলেই নয়! এর স্ট্র্যাপ অ্যাডজাস্টেবল। ফলে একই ব্রা-এ অনেক রূপ পাওয়া যাবে- স্ট্র্যাপলেস, ওয়ান শোলডার, ব্যাকলেস, রেসারব্যাক, হল্টার ইত্যাদি…
ডেমি ব্রা
লো নেকলাইন বা ডিপ ভি-কাট পরতে গেলে ডাক পরে এই ডেমি ব্রা-এর। এর কাপটা একটু ছোট হয় তাই একটু রিভিলিং কাট পরতে চাইলে সকলের অন্তর্বাস হিসেবে ফার্স্ট চয়েস এই ডেমি ব্রা।
এক্সট্রা ইনিংস
মাস্ট হ্যাভ্স-এর পালা শেষ। তবে অন্তবার্সের দেশে অপশন অফুরান বিশেষ করে ইনারওয়্যারের ক্ষেত্রে। চলো দেখে আর কী-কী অপশন রয়েছে বাজারে…
মিনিমাইজ়ার ব্রা
অনেকের বাস্টলাইন তুলনায় বড় হয়। এই ব্রা মূলত তাদের জন্য। মিনিমাইজ়ার ব্রা ব্যবহার করলে বাস্টলাইন আসলের চেয়ে ছোট দেখাবে।
পুশ আপ ব্রা
সেক্সি ড্রেস পরার সময় পুশ আপ ব্রা-এর প্রয়োজন হয়। সঙ্গে যাদের ব্রেস্ট তুলনায় ছোট তারাও এই অপশনে চোখ রাখতে পারে। এই ব্রা ক্লিভেজ তৈরি করে।
প্যাডেড ব্রা
বাস্টলাইন ছোট বলে মুখ ভার? মুখে হাসি ফেরাতে বন্ধুত্ব করে নিতে পার প্যাডেড ব্রা-এর সঙ্গে। এই ব্রা-এর বিশেষত্ব হল এর এক্সট্রা প্যাডিং। অনেকসময় প্যাডিংগুলো অ্যাডজাস্টেবল থাকে মানে বের করে নেওয়ার অপশনও থাকে।
ব্যালকোনেট ব্রা
শোনা যায় এর কাপ ব্যালকনি শেপের বলে এর নাম হয় ব্যালকোনেট ব্রা। হাফ বা থ্রি কোয়ার্টার কভারেজ দেয় ব্যালকোনেট।
এছাড়াও রয়েছে সিলিকন ব্রা, নিপ্ল টেপ, অ্যাডহেসিভ ব্রা, নভেলটি ব্রা-এর মত গুচ্ছ অপশন। প্রয়োজন অনুযায়ী কালেভদ্রে এই সব অপশনের দিকে পা বাড়ানো যেতে পারে তবে ভেবেচিন্তে। মনে রাখতে স্টাইলের জন্য যেন বাস্টের শেপ বা ফিটনেস কোনওটাই নষ্ট না হতে পারে।
P ফর…
ব্রা-এর ফিরিস্তি তো অনেক হল। এবার তাহলে পা বাড়ানো যাক অন্তবার্সের দেশের দ্বিতীয় সদস্যটির দিকে… হ্যঁা, ঠিকই ধরেছ প্যান্টির কথাই হচ্ছে এখানে। নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে ব্রা-এর হরেক ধরন তা নয় বুঝলাম, তবে প্যান্টি ক্লাবের সদস্য খুব বেশি হবে না! যদি এমনটাই ভাব, বলব ভুল ভাবছ! রেগুলার প্যান্টি ছাড়াও এই লিস্টিতে নাম রয়েছে যাদের তারা হল…
হিপস্টার
কমফর্ট এবং স্টাইলের কম্বো হিসেবে এই ধরনের প্যান্টি বেশ পপুলার। ঠিক ওয়েস্টলাইনের নীচে থেকে এর কভারেজ শুরু হয়। বলতে গেলে ব্রিফ, বিকিনি এবং বয়শর্টস তিনের তিনটি ফিচারের কম্বিনেশনে তৈরি হয় হিপস্টার। লো রাইজ় জিন্স বা মিনি স্কার্টের যোগ্য দোসর হিপস্টার।
টাঙা
বিকিনি এবং থং-এর মধ্যবর্তী পথে হাঁটলে চাইলে টাঙা বেছে নিতে পার। এর ওয়েস্টব্যান্ডটা সরু হয় আর দু’দিকে দু’টো স্ট্রিং দিয়ে আটকানো থাকে।
বয়শর্টস
ভাল কভারেজের জন্য বয়শর্টস-এর নামডাক ভারী। ছেলেদের শর্টস-এর কায়দায় তৈরি হয় বলেই হয়তো এর নাম বয়শর্টস। বিশেষত স্প্যান্ডেক্স ফ্যাব্রিক দিয়ে তৈরি হয় তাই কমফর্ট লেভেলও হাই। যে কোনও পোশাকের তলায় পরা যেতে পারে। তবে তুলনামূলক হাই রাইজ় হওয়ায় বেশি লো রাইজ় জিন্স বা স্কার্টের সঙ্গে পরা চলে না অনেকসময়ই।
কন্ট্রোল ব্রিফ
স্কিনটাইট পোশাক পরছ তবে বডি শেপ নিয়ে চিন্তিত? তোমার কপালের ভাঁজ দূর করতে তাকিয়ে দ্যাখো ওয়াড্রর্ব থেকে উঁকি মারছে কন্ট্রোল ব্রিফ… এই ধরনের প্যান্টি হাই-ওয়েস্টেড হয়। তাই কোমর এবং নিতম্বের সঙ্গে পেটের অনেকটা অংশই কভার করে এবং শেপ দেয়। তাই ককটেল ড্রেসের সঙ্গে এই কন্ট্রোল ব্রিফ না হলেই নয়, কি বল?
বিকিনি
শেষে আসি এমন এক অন্তর্বাসের কথায় যা পরে পরদায় সোনাম কপূর থেকে দীপিকা পাড়ুকোন সকলেই সিজ়লিং হট! বিকিনির কথা বলছি বন্ধুগণ তাদের মহিমায় এই টু-পিস পোশাক কেমন দেখতে হয় তা নিশ্চয়ই আর আলাদা করে চিনিয়ে দিতে হবে না? তবে একটা কথা বলি মন দিয়ে শোন… বিকিনিকে কিন্তু আর পাঁচটা অন্তর্বাসের মত এক ঘরে ফেললে চলবে না। এটি আসলে একটি সুইমসুট। এই টু-পিস-এর উপরের পিসটি জাস্ট বাস্টলাইনটা কভার করে। নীচের পিসটি হয় জি-স্ট্রিং বা থং স্টাইলের। মূলত সুইমওয়্যার হলেও আজকাল অনেকসময় অনেক পোশাকের নীচেও পরা হয় বিকিনি, বিশেষ করে শিয়ার মেটিরিয়ালের পোশাকের উপর পরলে এটি একটা নতুন স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি করে। কটন বা লাইক্রা দু’টি মেটিরিয়ালেরই হয় বিকিনি। মোনোকিনি, মাইক্রোকিনি, স্ট্রিং বিকিনি, ট্যাঙ্ককিনি ইত্যাদি আরও অনেক স্টাইলের বিকিনি পাওয়া যায়।
মনে রাখতে হবে….
অন্তর্বাসের ক্ষেত্রে হাইজিন খুব জরুরি ফ্যাক্টর। তাই অন্তর্বাসের পরিচ্ছন্নতার উপর যেন থাকে ফুল ফোকাস। অন্তর্বাসের ঠিকঠাক পরিচর্যা করলে তা টিকতে পারে বহুদিন। কী করে করবে জানতে ইচ্ছে করছে তো? রহস্যটা শেয়ার করলাম তোমাদের সঙ্গে…
ভাল কোনও মাইল্ড ডিটার্জেন্টে অন্তর্বাস চুবিয়ে রাখতে পার তবে মনে রাখতে হবে তা যেন ঘড়ি মেপে আধঘণ্টার বেশি না হয়।
ওয়াশিং বা গরমজলের সঙ্গে অন্তর্বাসের খুব একটা সদ্ভাব নেই। তাই তাদের দেখা না হওয়াই মঙ্গল।
ডার্ক কালারের অন্তর্বাসের সঙ্গে হালকা রংয়েরগুলো ভেজানোর আগে ভেবে দেখো দুধ সাদা আন্ডারওয়্যারে যদি কালো ছোপ পড়ে যায় নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে তো!
লোহার কোনও বাক্ল বা কিছু থাকলে দেখে নাও তাতে জং ধরেনি তো? যদি না থাকে তাহলে মঙ্গল। থাকলে তা খুলে ধোয়ার ব্যবস্থা করো। এতে অন্তর্বাসে জংয়ের দাগ পরে যাওয়ার টেনশন থাকবে না।
ব্রা-এর প্যাডেড জায়গাগুলো পরিষ্কার করার সময় একটু এক্সট্রা কেয়ার নিতে হবে বই কী। এই জায়গাগুলোতে ঘাম বেশি বসে যায় আর তা ঠিক মত পরিষ্কার না হলে পরে র্যাশের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সাবধান!
ধোয়ার সময় ব্রা-এর প্যাডগুলোকে ঘষার কথা ভুলেও মাথায় এনো না। বরং প্যাডেড অংশটা এক হাতে রেখে অন্য হাতটি মুঠো করে ঘষে নাও।
ধোয়া হয়ে গেলে নিংড়ানোই হল নেক্সট স্টেপ এটা ভাবলেই কেস জন্ডিস! এতে অন্তর্বাসের সাইজ় বেড়ে যায়।
ধোয়া হয়ে গেলে নিজের মত শোকাতে দাও। সূর্যের রশ্মিতে সরাসরি শুকোতে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। ছায়াই অন্তর্বাসের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল।
দরকারি ফান্ডা
যে কোনও অন্তর্বাস প্রথমবার পরার আগে একবার ধুয়ে নেবে।
সে যত নামী ব্র্যান্ডের জিনিসই হোক না কেন। এতে হাইজিন লেভেল মেনটেন হবে আর কোনও রকমের ইনফেকশনের ভয়ও থাকবে না।
প্রতি বছর নিজের সাইজ়টা চেক করে নেওয়া দরকার। দরকার হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পার। তবে সাইজ়ে বড় বা ছোট অন্তর্বাস পরলে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে।
অন্যের অন্তর্বাস কখনই পরবে না। এতে ইনপেকশন বা র্যাশ জাতীয় সমস্যাকে নিমন্ত্রণ করা হবে।
Boy জ়োন
অন্তর্বাসের দুনিয়ায় ছেলেদের রাজত্বও কিছু কম নয়। ফ্যাশন এবং কমফর্ট দু’টি বিষয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন ছেলেদের জন্যেও পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অন্তর্বাস। তোমার ওয়ার্ড্রবে কি জায়গা করে নিতে পেরেছে সেই সব আন্ডারওয়্যারের বৈচিত্র? মিলিয়ে দেখে নিতে চোখ রাখো এবার…
‘ব্রিফ’ বৃত্তান্ত
ব্রিফ হল বেসিক মেল আন্ডারওয়্যার। মোটের উপর ওয়েস্টলাইনের লোয়ার এন্ড থেকে শুরু করে সামনের দিকের পুরোটাই কভার করে রেগুলার ব্রিফ্স। তা তো সকলেরই জানা, তা হলে এই নিয়ে আর কেন আলোচনা? এটাই মনে হচ্ছে তো? তবে বলি শোন, ব্রিফ-এরও হরেক রকম ধরন হয় তা কি জানা ছিল বন্ধু? না থাকলে জেনে নাও এবেলা…
লো কাট ব্রিফ
এই ধরনের ব্রিফের ওয়েস্টব্যন্ডটা নাভির বেশ নীচে থেকে শুরু হয়। সামনে ফ্লাই থাকাটা এক্ষেত্রে অপশানাল। সাধারণ চেহারার ছেলেরা এই ব্রিফ ট্রাই করতে পারে। এই ধরনের ব্রিফে ওয়েস্টলাইনটা ভাল হাইলাইট হয়।
মিড কাট ব্রিফ
ওয়েস্টলাইনের থেকে দু’ইঞ্চি নীচে থেকে শুরু হয় এর ওয়েস্টব্যান্ড। সাধারণত একটু লুজ় হয় এই ধরনের ব্রিফ্সগুলো। তবে চাইলে এই ব্রিফ প্রায় নাভির কাছে তুলে আনা যায়।
বক্সার ব্রিফ
এককথায় বলতে গেলে ট্র্যাডিশানাল ব্রিফের ফিটিং আর বাইকার আন্ডারওয়্যারের লুক মেলালে যা তৈরি হবে বক্সার ব্রিফ অনেকটা তেমনই। এক্সারসাইজ় আর খেলাধূলোর সময় এই ব্রিফ খুব কমফর্টেবল।
বোর্ডার শর্টস
এই ধরনের শর্টস মূলত ওয়াটার স্পোর্টস ইনারওয়্যার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ট্রাঙ্ক স্টাইলের এই ব্রিফগুলোর ফিটিং খুব একটা টাইট হয় না। লেংথের ক্ষেত্রে এই ধরনের আন্ডারওয়্যার বেশ অনেকটাই লম্বা। অনেকসময় প্রায় হাঁটুর কাছাকাছি নেমে এলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে অনেকক্ষণ পরে থাকার জন্য বোর্ডার শর্ট্স খুব একটা পাত্তা পায় না।
বক্সার
নামটা নিশ্চয়ই বেশ চেনা-চেনা লাগছে? লাগতেই পারে পপুলারিটির দৌড়ে বক্সার কিন্তু আজকাল বেশ এগিয়ে। বক্সারদের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছিল এই বক্সার। হাঁটুর বেশ কিছু ইঞ্চি উপুর অবধি ঝুলের এই আন্ডারগার্মেন্টে ফ্রন্ট ফ্লাই থাকে। ট্রাউজ়ারের নীচে পরার জন্য অনেকেই আইডিয়াল মনে করে বক্সারকে। তাছাড়া স্পোর্টসপার্সনদেরও প্রথম পছন্দ বক্সার।
ফুল কাট বক্সার
বক্সার নিয়ে সাম্প্রতিককালে অনেক এক্সপেরিমেন্ট চলছে। তার মধ্যেই একটা হল বক্সারের এই ফুল কাট রেঞ্জ। এক্ষেত্রে লেগ ওপেনিংটা তুলনায় একটু বড় হয়। ভিতরের সিমগুলো এমনভাবে ডিজ়াইন করা যাতে হাঁটাচলা করতে কোনও অসুবিধে না হয়। এর ফলে কমফর্ট লেভেলটাও বেশি পাওয়া যায় আর সহজে ভাঁজ পরে যাওয়ারও সমস্যা থাকে না।
ট্রাঙ্ক্স
মডার্ন ট্রাঙ্ককে অনেকে মজার ছলে বক্সারের বড় ভাইও বলে থাকে। কারণ এর কাট প্রায় কাছাকাছি। তফাতটা হল এর ফিটটা বক্সারের তুলনায় একটু টাইট। লেংথের দিক থেকেও দেখতে গেলে একটু ছোট। ভিতরের সিমগুলোও একটু ছোট হয়।
স্পোর্টস ব্রিফ
এই ব্রিফের কাট একটু অন্যরকম হয়। ফ্রন্ট এবং রেয়ার পোর্শন কভার থাকলেও পায়ের দিকের কাটটা বেশ সরু। সাইডব্যন্ডটাও খুব একটা চওড়া হয় না।
এছাড়াও আন্ডারওয়্যারের দুনিয়ায় ছেলেদের আরও অনেক অপশন রয়েছে যেমন জক স্ট্র্যাপ বা থং বা বিকিনি স্টাইল্ড আন্ডারওয়্যার ইত্যাদি। তবে মনে রাখতে হবে আন্ডারওয়্যারের ক্ষেত্রে ফার্স্ট রুল-ই হল কমফর্ট তারপর আসে স্টাইল ফ্যাক্টর। তাই আন্ডারওয়্যার বাছার ক্ষেত্রে সবসময় এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
কেয়ার রুটিন
অন্তর্বাসের কেয়ার নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। তাই কেয়ার ইনস্ট্রাকশনটা মেনে চলার চেষ্টা করবে সবসময়। মোটের উপর অম্তর্বাস সবসময় আলাদা ধোয়ার চেষ্টা করবে। নিংড়ানোর কথা যেন কখনই মাথায় না আসে। ভুল করেও রোদে শুকোতে দেবে না।
লেখক: পারমিতা মুখোপাধ্যায়

Be the first to comment on "অন্তর বাস কথন!"