নিউজ ডেস্ক : নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া খ্রিষ্টান পল্লীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত সুনীল ড্যানিয়েল গোমেজ হত্যাকান্ডের ঘটনায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিহতের একমাত্র কন্যা স্বপ্না গোমেজ বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিবার রাতেই সুনীল গোমেজের বাসার ভাড়াটে সবুজ আলী নামের এক ট্রাক ড্রাইভারকে আটক করে পুলিশ। পরে ঐ রাতেই জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে এনে আটক সবুজকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্সি শাহাবুদ্দীন জানান, সুনীল গোমেজ হত্যাকা- ক্লুলেস। তাছাড়া, হত্যাকান্ডের সাথে চাঁদাবাজি বা অন্য কোন বিষয় জড়িত আছে কিনা সে বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, খুব শিঘ্রই এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) আব্দুল হাই জানান, সুনীল ড্যানিয়েল গমেজ হত্যাকান্ডটি একেবারেই ক্লু বিহীন। তদন্তে কোন ক্লু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও মামলাটির রহস্য উদঘাটনে কাজ করে যাচ্ছি। তবে আশা করছি খুব শিঘ্রই মামলার রহস্যজট খুলে যাবে।
রবিবার সকাল ৮টার দিকে বনপাড়া খ্রিষ্টান পল্লীর চার্চে সাপ্তাহিক প্রার্থনা করতে যান সুনীল গমেজ। প্রার্থনা শেষে সেখান থেকে বের হয়ে তিনি বনপাড়া বাজার হয়ে নিজ বাড়ী ফিরে আসেন এবং প্রতিদিনের মত তার মুদিখানা দোকান খুলে বসেন। পরে দুপুর ১২ টার দিকে একজন ভ্যান চালক ওই দোকানের সামনের সামনের দিকে সুনিল গোমেজের রক্তাক্ত ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার চোচমেচি করলে স্থানীয় লোকজন এসে তার মৃত দেহ দেখতে পায়। মৃত্যুর সময় তার কোমর ও মাথা দোকানের বাইরের দিকে উপুড় অবস্থায় ঝুলে ছিল। এছাড়া দুইটি হাতে তিনি টাকা ধরে ছিলেন। তবে হামলার সময় দোকানের বাইরে ও ভিতরের কোথায় ভাংচুর বা হামলার কোন আলামত পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে পুরো এলাকা ঘিরে রাখে। বিকেল ৪টার দিকে সিআইডির ক্রাইম সিনের ৫সদস্য হত্যাকাণ্ডেের স্থল পরিদর্শন শেষে আলামত সংগ্রহ করে।
এরআগে রবিবার রাতেই নিহত সুনীল গোমজের মরদেহ নাটোর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়না তদন্ত শেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোমবার সকালে পরিবারের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করেছে। সোমবার বিকেলে ৪টায় বনপাড়া চার্চে প্রার্থনা শেষে সুনীল গোমেজকে স্থানীয় খ্রিষ্টান সমাধিক্ষেত্রে সমাহিত করা হয়।
ময়নাতদন্তের বিষয়ে নাটোর সদর হাসপাতালে আবসিক চিকিৎসক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ধারালো অস্ত্রে আঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই সুনীল গোমেজের মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া সুনীল গোমজের ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের কারণে তার রগ কেটে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যার কারণে খুব দ্রুত মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। এদিকে, সুনীল হত্যাকাণ্ডের ২৪ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বনপাড়া খ্রিষ্টান পল্লীর বাসিন্দারা।
Be the first to comment on "খ্রিষ্টান ব্যবসায়ী হত্যার মামলা ডিবিতে হস্তান্তর"