নিউজ ডেস্ক॥ নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন,অসীম সাহসিকতা,বীরত্বপূর্ণ অবদান এবং সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ দ্বিতীয়বারের মতো ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক’ পেয়েছেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারী পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পদক পরিয়ে দেন। এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ শাখা-২ এর উপসচিব ফারজানা জেসমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ ৩৪৯ পুলিশ কর্মকর্তাকে বিপিএম ও পিপিএম পদকের জন্য মনোনীত করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ লতিফুর রহমান পলাশ হত্যাসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সেবা, সততা ও শৃঙ্খলায় প্রশংসনীয় অবদানের জন্য নড়াইলের পুলিশ সুপারকে ‘পিপিএম-সেবা’র জন্য মনোনীত করা হয়।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পদক পাওয়ার বিষয়টি আনন্দের। পেশাগত জীবনে এ ধরণের মূল্যায়ন আরো দায়িত্ব ও নিষ্ঠাবান করে তুলবে এবং উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা যোগাবে।’ তিনি আরো বলেন, জঙ্গীবাদ, মাদক, ইভটিজিং ও সন্ত্রাসীরা সমাজ তথা দেশ ও জাতির শত্রু। এদের নির্মূলের মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় এগিয়ে যেতে চাই। মানুষের জন্য কাজ করতে পারাটা আমার জন্য সম্মানজনক। নড়াইলবাসীর সঙ্গে নিষ্ঠা,সততা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে জনগনের কাংখীত সেবা নিশ্চিত করতে চাই।
তিনি ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগের তৎকালীন ডিসি হিসেবে কর্মরত থাকা কালিন বিদেশীদের নিরাপত্তা দেয়ায় এই পুলিশ সুপারকে ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক’ (পিপিএম) প্রদান করা হয়। ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারী রাজারবাগ পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে এ পদক গ্রহণ করেন। গুলশান-২ এর ৭৯ নং সড়কের হলি আর্টিসান রেস্তোঁরায় জঙ্গি হামলার আগে ও পরে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
নড়াইলের পুলিশ সুপার হিসেবে ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী যোগদান করেন। দায়ীত্ব পেয়ে জেলার মাদক নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপেরে পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন এলাকায় শান্তিপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন তিনি। যার মধ্যে অন্যতম- লোহাগড়া উপজেলার পারমল্লিকপুর, আমাদা, সরুশুনা, বাড়িভাঙ্গা খাল, লাহুড়িয়া, কোটাকোল, কালিয়া উপজেলার কলাবাড়িয়া, যাদবপুর, রঘুনাথপুর, সদরের চৌগাছা ও হোগলাডাঙ্গাসহ জেলায় প্রায় দু’শ টি বিরোধ মীমাংসা করেছেন তিনি।
সেবার ব্রত নিয়ে সর্বদায় সদালাপী এই পুলিশ অফিসার ১জানুয়ারী ১৯৭৩ সালে ফেনীর সদর উপজেলার মধ্যম জাহানপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ-বিজ্ঞানে অনার্স-মাস্টার্স শেষে ২০০৫ সালে পিএসসির ২৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একই বছর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষিত ও সুদীপ্ত কর্মময় জিবনে ২০১০ সালে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন হাইতিতে অংশ গ্রহন করে বিশেষ অবদানের জন্য ‘জাতিসংঘ শান্তি মিশন পদক অর্জন করেন’। ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল তিনি পুলিশ সুপার (এসপি) পদে পদোন্নতি লাভ করে।
পারিবারিক জীবনে তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার চৌধুরী সুমি ঢাকার সিটি ইউনিভার্সিটির ম্যানেজমেন্ট বিষয়ের সাবেক শিক্ষক। ছেলে ফাইজুম সালেহীন সামির যশোর ইংলিশ স্কুলের দশম শ্রেণী এবং মেয়ে সামিহা মুবাশ্বিরা রোজ নড়াইল সরকারী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
Be the first to comment on "নড়াইলের পুলিশ সুপার গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন ও সেবায় ‘রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত"