নিজস্ব প্রতিবেদক : সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। সোমবার ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
আদালত মামলার সাক্ষীর জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। বিপুল হতাহতের ঘটনায় বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া রানা প্লাজা ধসের তিন বছর পর অভিযোগ গঠনের আদেশের মধ্য দিয়ে এ মামলার আসামিদের বিচার শুরু হল।
ভবন মালিক সোহেল রানাসহ গ্রেপ্তার ৬ আসামি ছাড়াও মোট ৩৫ জন আসামি অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি ছয়জনকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলবে। আসামিদের মধ্যে ৩৮ জনকে হত্যা এবং বাকিদের অন্যান্য ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে এ আদালতের পিপি খন্দকার আবদুল মান্নান জানান। তিনি বলেন, আদালতে উপস্থিত আসামিরা বিচারকের প্রশ্নের জবাবে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে সুবিচার প্রার্থনা করেন।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাসস্ট্যন্ড সংলগ্ন আট তলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়লে শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন, আহত হন আরও হাজারখানেক শ্রমিক যারা ওই ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। বাংলাদেশের ওই ঘটনা সে সময় আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়। দেশে কারখানার অবকাঠামোগত নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এলে সরকার ও মালিকরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।
ভবন ধসে প্রাণহানির ঘটনায় প্রথমে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগে একটি মামলা করেন সাভার থানার এসআই ওয়ালী আশরাফ। রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ ২১ জনকে এজাহারে আসামি করা হয়। তবে তদন্ত শেষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত মৃত্যু ঘটানোসহ দণ্ডবিধির ৩০২, ৩২৬, ৩২৫, ৩৩৭, ৩৩৮, ৪২৭, ৪৬৫, ৪৭১, ২১২, ১১৪, ১০৯, ৩৪ ধারায় বিভিন্ন অভিযোগ আনেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ( সিআইডি) সহকারী সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর গতবছর ১ জুন ওই অভিযোগপত্র জমা দেন।
এতে বলা হয়, রানা প্লাজায় ফাটল ধরার পর ঝুঁকি জেনেও শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। কাজ না করলে চাকরিচ্যুতির হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে প্রমাণ পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
Be the first to comment on "রানা প্লাজা ধস: হত্যা মামলার বিচার শুরু"