রাজন,লোহাগড়া,(নড়াইল) প্রতিনিধি : কাগজে-কলমে তাহেরা পোল্ট্রি ফার্ম,স্বত্বাধিকারী সুমি খানম, মূলত তিনি একজন গৃহীনি ও এক ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী। অপর দিকে শাহিনুর টেইলর্সের স্বত্বাধিকারী শাহিনুর বেগম ও একজন গৃহীনি। এই দুই প্রতিষ্ঠানের নামে তিন লাখ করে মোট ছয় লাখ টাকাসহ পূর্ণ কাগজপত্র ছাড়া নিজ স্ত্রীসহ তার পছন্দমত অসংখ্য ব্যাক্তিদের মাঝে লাখ লাখ টাকার কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী ঋণ দিয়েছেন সোনালী ব্যাংকের লক্ষীপাশা শাখার ব্যবস্থাপক মো: নূরুল আমিন।
সরেজমিনে খোজ খবর নিয়ে জানা যায়, কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ‘ তাহেরা পোল্ট্রি ফার্ম’। উল্লেখিত দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামে অবস্থিত ঠিকানায় গিয়ে যার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় নাই। এই ঋণ গ্রহীতা অগ্রণী ব্যাংক নড়াইল শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো: শরীফুল ইসলামের স্ত্রী সুমি খানম। অপর ঋণ গ্রহীতা শাহিনুর টেইলর্সের একই চিত্র। ঋণ গ্রহনকালে উল্লেখিত ঠিকানা কুমড়ি মধ্যপাড়া বাজারে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায় নাই। তবে পশ্চিমপাড়ার খালপাড়ে তার বাড়িতে গিয়ে দুইটি সেলাই মেশিন দেখা যায়। শাহিনুর বেগম একজন গৃহীনি। তিনি ঋণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, টাকাটা তুলে তার ছেলেকে দিয়েছেন দিঘলিয়া বাজারে সিমেন্টের ব্যাবসা করতে। দিঘলিয়া বাজারে গিয়ে ‘সজিব ট্রেডার্স’ নামের একটি সাইানবোর্ডের দেখা মিললেও ব্যবসার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় নাই। এ ছাড়া অসংখ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষি ঋণ বিতরণে ব্যাংকের নিয়ম নীতিকে উপেক্ষা করে পূর্ণ কাগজপত্র ছাড়া নিজের পছন্দের ব্যাক্তিদের ঋণ দিয়েছেন এই কর্মকর্তা। ব্যবস্থাপক নুরুল আমিন’র স্ত্রী সাজিয়া ইসলাম একজন গৃহীনি হলেও তিনি পেয়েছেন একলাখ টাকার কৃষি ঋণ। পৌর শহরের কচুবাড়িয়া গ্রামের অরুপ কুমার চক্রবর্তী, তিনি লোহাগড়া পল্লী উন্নয়ন ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তার স্ত্রী অংকন চক্রবর্তী, তিনি একজন গৃহীনি, তার কোন প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও স্ত্রীর নামে পেয়েছেন পঞ্চাশ হাজার টাকার ব্যবসায়ী ঋণ। খোজ নিয়ে জানা যায়, এই শাখায় ঋণ বিতরণ কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে ৮ থেকে ১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দালালচক্র গড়ে উঠেছে। এই দালালচক্রের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে। ব্যাংকের এহেন অনিয়ম দুর্নীতিতে সাধারন ব্যবসায়ী ও প্রান্তিক কৃষকরা ক্ষুদ্ধ। তারা এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন।
এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক লক্ষীপাশা শাখার ব্যবস্থাপক মো: নূরুল আমিন, অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ব্যাংকের সকল নিয়ম-নীতি মেনে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ"