শিরোনাম

লোহাগড়ায় ছাত্র সংসদকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ,আহত-২

লোহাগড়ায় ছাত্র সংসদকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ,আহত-২

নিউজ ডেস্ক॥ নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি কলেজের বিলুপ্ত ছাত্র সংসদের ভবনে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের বসাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দু’পক্ষের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় মহিলাসহ দু’জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের পর কলেজসহ আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ ড. মহব্বত আলীর বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি বিরুদ্ধে দু’একজন ব্যতিত অধিকাংশ শিক্ষক প্রতিবাদ করেছেন। এ নিয়ে শিক্ষকদের সাথে অধ্যক্ষের প্রায় বাকবিতন্ডার ঘটনা যেন রুটিনে পরিণত হয়েছে। ফলে কলেজে তিনি অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। অধ্যক্ষ তার অনিয়ম-দুর্নীতি ও নিজেকে রক্ষায় ছাত্রলীগের একাংশ (জোসেফ গ্রুপ) এর কতিপয় ছাত্রদের আর্থিক সুবিধা প্রদান করে ১৯৯২ সালের বিলুপ্ত ছাত্র সংসদ পূনরুজ্জীবিত করেছেন। অধ্যক্ষ সেখানে ছাত্রদের বসার জন্য চেয়ার-টেবিল, টেলিভিশন ও আসবাবপত্রসহ ইন্টারনেট ব্রডনেট সংযোগের মাধ্যমে ওয়াইফাই ব্যবস্থা রাখবেন বলে ছাত্রদের আশ্বস্থ করেন। সে লক্ষে ভবনটি সংস্কার ও আসবাবপত্র ক্রয় করা হয়েছে। সেখানে ছাত্রলীগের একাংশের বসাকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মুন্সি জোসেফ হোসেন সমর্থিত নেতা কর্মীদের সাথে সাধারণ সম্পাদক এমএম রাশেদ হাসান সমর্থিতদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গত শুক্রবার (২৭সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাশেদ সমর্থিত শিক্ষার্থী হাসিবকে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে হাতুড়িপেটা ও শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ক্যাম্পাসের মধ্যে আকাশ নামের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করে তার ব্যবহৃত এ্যাপাচি মোটরসাইকেল নিয়ে যায় জোসেফ সমর্থিত ছাত্রলীগ নেতা শাওন, হৃদয়, শান্ত ও মেহেদীসহ আট থেকে দশজন।
এঘটনা ও মোটরসাইকেল উদ্ধারকে কেন্দ্র করে বেলা ১২ টার দিকে রাশেদ সমর্থিত ১০/১২ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী শিক্ষার্থী শান্তর কাছে মোটরসাইকেলের অবস্থান জানতে চেয়ে মারধোর করে। শান্তর স্বীকারোক্তিতে শাওন ও হৃদয়ের কলেজ পাড়ার ভাড়া বাড়িতে হানা দেয়। সেখানে মোটরসাইকেল ও তাদের না পেয়ে ফেরার পথে কলেজ গেটের সামনে হৃদয়ের মা পারুল বেগমকে বেধড়ক মারপিট ও কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে। স্থানীয়রা আহতদেরকে উদ্ধার করে লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এঘটনায় লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএম রাশেদ হাসান জানান, তিনি দলীয় কাজে ঢাকাতে রয়েছেন। বিষয়টির জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করে লোহাগড়ার সকল ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোকাররম হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ক্যাম্পাস এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য লোহাগড়া কলেজে ছাত্র সংসদের আধিপত্ত্ব বিস্তারকে কেন্দ্র করে ১৯৯২ সালের ১২ডিসেম্বর ছাত্রনেতা মুন্সি আতাউল হক মিলু হত্যার শিকার হয়। হত্যা মামলায় আসামী ছিলেন, লোহাগড়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান শিকদার সাইদুর রহমান, বর্তমান চেয়ারম্যান শিকদার নজরুল ইসলাম, জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি শিকদার আজাদ রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম মুন, লোহাগড়া উপজেলা আ’লীগের প্রচার সম্পাদক বুলবুল শিকদার সেলিম, যুবলীগের সহ-সভাপতি ও তৎকালিন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান ও কামরুজ্জামান পল্টুসহ অনেক নেতাকর্মী। পরবর্তিতে প্রশাসন ছাত্রসংসদকে বিলুপ্ত করেন।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "লোহাগড়ায় ছাত্র সংসদকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ,আহত-২"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*