নিউজ ডেস্ক ॥ প্রায় দু’বছর ধরে চলছে মহামারি করোনা। করোনা দেখিয়ে দিচ্ছে চরম বাস্তবতা আর অমানবিকতার চূড়ান্তরুপ। অক্সিজেনের অভাবে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছে মানুষ। অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী, দিনমজুরেরা। বেড়েছে দারীদ্রতার সংখ্যা। এমন এক অনিশ্চিত বাস্তবতায় লোহাগড়া থানার পাশে মানবিকতার খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলায় মানবিকতা আছে কেবল কথায়। খোদ মানবিকতা নেই পৌর এলাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আর এল পাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘মানবতার দেয়ালে’। লোহাগড়া পৌর শহরের একমাত্র মানবতার দেয়ালে মানবিকতার চিহ্নমাত্র নেই। স্থানীয় সামাজিকতার মতো দেয়াল থেকেও চলে গেছে মানবতা। দেয়ালে ‘আপনার অপ্রয়োজনীয় কাপড় এখানে রেখে যান, প্রয়োজনীয় কাপড় নিয়ে যান’ লিখে সেখানে অসহায়, সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য কাপড় ঝুলিয়ে রাখা হতো। কিন্তু বর্তমানে মানবতার দেয়াল পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। লোহাগড়া পৌর এলাকার গোপীনাথপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত শেখ বিল্লাল হোসেনের ছেলে উদীয়মান তরুন সমাজসেবক খালিদুর রহমান ছোটনের উদ্যোগে প্রায় তিন বছর আগে স্থাপন করা হয় মানবতার দেয়াল। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিবর্ণ হয়ে পড়ে এটি। দেয়ালের কাছের সেলুন দোকানি বেনু চন্দ্র শীল জানান, শুরুতে কিছুদিন এখানে প্রতিনিয়ত কাপড় থাকলেও একটা সময়ের পর এখানে আর কেউ কাপড় রাখতো না। তিনি বলেন, ‘দেয়ালে কাপড় দেয়ার থেকে নেয়ার লোক অনেক বেশি। আগে বেশ কাপড় রাখা থাকতো। আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে। অনেক দিন এমনিতেই পড়ে আছে দেয়ালটি।’ মানবতার দেয়ালটি বৃষ্টি এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বেডিং ব্যবসায়ী পান্নু গাজী বলেন, ‘এইখানে মানুষজন কাপড়-চোপড় রাখতো। যাদের কাপড় কেনার একেবারেই সামর্থ্য নাই তারা এই দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকতো।’ দেয়ালে কাপড় নাই, মানবতাও নাই।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় বিবর্ণ মানবতার দেয়াল"