নিউজ ডেস্ক॥ কুকুরের শহর যেন লোহাগড়া পৌরসভা। যত্রতত্র কুকুরের আনাগোনায় পথ চলা মুশকিল হয়ে দাড়িয়েছে। কুকুরের প্রজনন সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে লোহাগড়া পৌরশহরসহ উপজেলাব্যাপী তাদের আনাগোনা বেড়ে যায়। উচ্চ আদালত থেকে কুকুর নিধনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পথচারীরা সমস্যায় পড়েছে। ফলে লোহাগড়া পৌরসভা কতৃপক্ষ কুকুর নিধন করতে পারছে না। স্কুল পড়–য়া কমলমতি শিশুরা স্কুলে যেতে যেমনি ভয় পাচ্ছে, তেমনি অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে থাকছেন চরম আতংকে। রাতে পৌরসভার প্রানকেন্দ্র লক্ষীপাশা চৌরাস্তায় কুকুরা ২০-৩০জন করে দল বেধে চলে। একাকি কোন লোকজন ও মটর সাইকেল আরোহীকে দাবড়িয়ে কামড়ানোর চেষ্টা করে। মটর সাইকেল আরোহী অনেক সময় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুকুরের কামড়ে মানুষ অহরহ আহত হচ্ছে। লোহাগড়া হাসপাতালে গত কয়েক মাসে প্রায় দেড় শতাধিক কুকুরে কামড়ানো রোগী এসেছে, কিন্তু হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানোর কোন চিকিৎসা না পেয়ে রোগী নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে অভিভাবকদের। প্রতিদিন এ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও কোন মাথা ব্যাথা নেই হাসপাতাল কতৃপক্ষের। এ ব্যাপারে লোহাগড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শেখ আবুল হাসনাত বলেন, কুকুরে কামড়ানোর ভ্যাকসিন এবং কুকুর বন্ধ্যাকরণ পদ্ধতি বা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক ইনজেকশনও বরাদ্ধ নাই। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নড়াইল সদর হাসপাতাল পর্যন্ত এসেছে। হয়তো সামনে সময়ে বরাদ্ধ পাওয়া যেতে পারে। কোন রোগী এলে নড়াইল সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়ে থাকে।
গ্রামের মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে অপচিকিৎসার দিকে ঝুকে পড়ছে। ফলে খাপড়া পড়া, পানি পড়া, কলা পড়া, পিতলের থালা পড়া পিঠে লাগানোসহ বিভিন্ন কবিরাজি ওষুধ সেবন করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, লোহাগড়া পৌরশহর ছাড়াও প্রতিটি গ্রামে অসংখ্য কুকুর রয়েছে। এই কুকুরের বন্ধ্যাকরণ বা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক ইনজেকশন দেয়ার কথা থাকলেও সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদেও কোনো প্রতিষেধক নেই। বিষয়টি নিয়ে লোহাগড়া পৌর কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া বলেন, পৌর এলাকায় যে হারে কুকুরের উপদ্রুপ বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে মানুষ প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসছে। কিন্তু কুকুর নিধনে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকায় আমরা কিছুই করতে পারছি না। অন্যদিকে, কুকুর বন্ধ্যাকরণ পদ্ধতি বা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক ইনজেকশনও আমরা পাচ্ছি না। ফলে সব মিলিয়ে আমরা কঠিন বিপদের মধ্যে আছি।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় বেড়েছে কুকুরের উৎপাত"