শিরোনাম

সাম্প্রদায়ীক হামলা,অজ্ঞাত আসামী করে বিরোধীদলকে দমানোর চেষ্টার অভিযোগ বিএনপির

সাম্প্রদায়ীক হামলা,অজ্ঞাত আসামী করে বিরোধীদলকে দমানোর চেষ্টার অভিযোগ বিএনপির

রাশেদ, দিঘলিয়া থেকে ফিরে : নড়াইলের লোহাগড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে সাহাপাড়ার রাধা গোবিন্দ মন্দিরে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও তদন্ত দলের প্রধান এ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা এমপি, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু ,খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিপূন রায় চৌধুরী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার ক্ন্ডুু ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ্যাডঃ ফাহিমা নাসরিন মুন্নি ।
তদন্ত দলের প্রধান এ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন,বর্তমান সরকারের আমলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদ নয়। সরকার ও প্রশাসন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ সরকারের আমলে দেশে একের পর এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের ওপর হামলা হচ্ছে, যার একটিরও সুষ্ঠু বিচার হয়নি। উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মোতাবেক বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ হামলার বিষয়টি তদন্ত করতে এখানে এসেছেন। আমরা এধরনের হামলার নিন্দা জানিয়ে ঘটনার সাথে প্রকৃত জড়িতদের বিচারের দাবী জানাই ।
ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা এমপি বলেন, দিঘলিয়ায় হিন্দুদের বসতবাড়ি, দোকান ও মন্দির ভাংচুর করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা রামু, কুমিল্লা, পাবনা, নাসিরনগরে আগেও ঘটেছে। যদি একটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হতো তাহলে নড়াইলে হামলা হতো না। এই সরকার মনে করে যদি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা এ দেশে থাকে তাহলে তাদের ভোট পাওয়া যাবে, আর যদি ভয়ে তারা দেশ ত্যাগ করে তাহলে তাদের জমি দখল করা যাবে। পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে বিরোধী দলকে দমন করার চেষ্টা করা হয়। যারা নিরপরাধ মানুষ তাদেরকে মামলায় ফাঁসানো হয়, যারা প্রকৃত আসামী তারা পার পেয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতি এবং পুলিশ ৪৫ মিনিট সময় পেলেও কি করেছেন বলে তিনি প্রশ্ন রাখেন । তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রকৃত অপরাধিদের শাস্তির দাবী জানান ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা বিএপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, সাধারন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সহ সভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আলী হাসান, লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জিএম নজরুল ইসলাম, সদস্য সচিব কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম, লোহাগড়া পৌর কাউন্সিলর মিলু শরীফ, খালেদা আক্তার, লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সালেহা বেগম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ও নড়াইল জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক রবিউল ইসলাম পলাশ, সহ প্রচার সম্পাদক ও লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক সৈয়দ আব্দুস সবুর, নড়াইল জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সাধারন সম্পাদক এবং লোহাগড়া পৌর যুবদলের আহবায়ক মো: রবিউল ইসলাম রবি, যুগ্ন আহবায়ক মুস্তাহিদুর রহমান আমিন, আশিকুর রহমান স্বপন, লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও নড়াইল-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শরীফ কাসাফুদ্দোজা কাফী, লোহাগড়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আহাদুজ্জামান বাটু, নড়াইল জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক প্রকেীশলী তাইবুল হাসান, প্রমুখ । এ সময় ক্ষতিগ্রস্থ মন্দির সংস্কার ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুলাই লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়ায় হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ার অভিযোগে স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ লোকজন সাহাপাড়ার বাড়ি ,দিঘলিয়া বাজারের দোকান ও পূজামন্ডপ ভাংচুর করে এবং একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় ৯ জনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের প্রত্যেকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। তাদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লোহাগড়া থানার এসআই মিজানুর রহমান।

 

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "সাম্প্রদায়ীক হামলা,অজ্ঞাত আসামী করে বিরোধীদলকে দমানোর চেষ্টার অভিযোগ বিএনপির"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*