নিউজ ডেস্ক ॥ আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইতি খানমকে (২০) স্বামী নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। গত পাঁচদিন ধরে ইতি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও স্বজনরা তার খোঁজ নেয়নি।
জানা গেছে,ইতি খানম নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামে হারুন অর রশিদের মেয়ে এবং একই গ্রামের মামাতো ভাই তিতাস কাজীর স্ত্রী। তিতাসের সাথে প্রায় দুই বছর আগে তার বিয়ে হয়। তিতাস কাজী সিরাজগঞ্জে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। এর আগে তিতাস কাজী তিনটি বিয়ে ছিল। অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দুই স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, অপর স্ত্রী মারা যায়।
ইতির পরিবার জানায়, গত এক বছর ধরে ইতিকে তার স্বামী প্রায়ই নির্যাতন করে। গত ১লা জুন তালাক দেওয়ার জন্য তার স্বামী বাড়িতে কাজী ডেকে নেয়। তালাকে স্বাক্ষর না করায় সারাদিন মারধর করে বিকেলে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ইতি পার্শ্ববর্তী আতশপাড়া নামক স্থানে জ্ঞান হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। স্থানীয় লোকজন এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে আবগত করেন। পরে লোহাগড়া থানা পুলিশ সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তার শ্বশুর বাড়ির পরিবার প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর হওয়ায় দুই বছর আগে জোর করে পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাকে বিয়ে করে। বিয়েতে মেয়েটি রাজি না হয়ে বড় বোনের বাড়ি গিয়ে পলায়। সেখান থেকে ধরে এনে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়।
ইতির বাবা হারুন অর রশিদ বলেন, তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুবই খারাপ। হাসপাতালে দেখতে গেলে বা তার খোঁজ-খবর নিলে আমাদের ওপর যে চাপ দেবে তা সহ্য করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই মেয়েটির খোঁজ নিতে যায়নি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইতি বলেন, আমি এখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার বাবার বাড়ি থেকে তাকে তালাক দিতে বলে। আমি এতে রাজি না হওয়ায় বাবার বাড়ি থেকে আমার খোঁজ নিচ্ছে না। শ্বশুর বাড়ি থেকেও তালাক দিতে চায়। কিন্তু আমি স্বামীর সংসার করতে চাই। হাসপাতালে আসার পর আমার কোনো আত্মীয়-স্বজন আমার খোঁজ নেয়নি। আমি এখন কোথায় আশ্রয় পাবো ? ইতির স্বামী তিতাস কাজীর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, তাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করেছি। তার শ্বশুরবাড়ি তালা দেওয়া। ঘটনার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়েছে। তার স্বামীকে ধরার চেষ্টা জোর চেষ্টা চলছে।
Be the first to comment on "স্বামীর নির্যাতনে বাড়িছাড়া অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, ঠাঁই কোথায়!"