লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়ায় এক কলেজ পড়–য়া ছাত্র হযরত মুহাম্মদকে (সাঃ) অশ্লীল ভাষায় কটূক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে বিক্ষুদ্ধ জনতা ৩টি হিন্দু বাড়ি, ৬টি দোকান ও দুটি মন্দির ভাঙচুর করেছে। এ সময় একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। শুক্রবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার দিঘলিয়া বাজার ও সাহাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। রাত ৯টার দিকে পুলিশ-র্যাব ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। অভিযুক্ত আকাশ সাহা পলাতক থাকায় তার অবস্থান জানার জন্য প্রশাসন রাতেই আকাশের পিতা অশোক সাহাকে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছে। বর্তমান ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ-র্যাবসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
সরেজমিন জানা যায়, নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজে ¯œাতকের ছাত্র ও দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ার আশোক সাহার ছেলে আকাশ সাহা তার ফেসবুকের আইডি থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটের সময় হযরত মুহাম্মদকে (সাঃ) অশ্লীল ভাষায় কটূক্তি করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়।
বিষয়টি নিয়ে জুম্মার নামাজের পর মুসল্লিদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ক্ষোভ থেকে বিক্ষুদ্ধ জনতা শুক্রবার বিকালে সাড়ে চারটার দিকে দিঘলিয়া বাজারে অবস্থিত ৬টি হিন্দু দোকান ও পরে অশোক সাহার বাড়িতে হামলা চালায়। এরপর শত শত বিক্ষুদ্ধ জনতা অভিযুক্ত আকাশ সাহাকে আটকের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। একপর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ জনতা, দু’টি মন্দির ভাংচুর ও সাহাপাড়ার মৃত নারায়ন চন্দ্র সাহার স্ত্রী দিপালী সাহার বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করে।
রাত ৯টার দিকে নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়ের নেতৃত্বে লোহাগড়া থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, র্যাব-৬, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্ঠান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়।
এদিকে শনিবার সকালে নড়াইলের জেলা প্রশাসক মো: হাবিবুর রহমানসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্ঠান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি, সাংগঠনিক সম্পাদক সমেন সাহা,পুজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ডা: চন্দ্রনাথ পোদ্দার,সহ-সভপতি এ্যাড: তাপস সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক শুভাশিষ বিশ্বাস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাধারন সম্পাদক কপিল কৃষ্ণ মন্ডল, যশোর জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রতন দাসসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় নড়াইল জেলা ও লোহাগড়া উপজেলার হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্ঠান ঐক্য পরিষদ ও পুজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি শেখ আবু হেনা মিলন বলেন,‘ওই এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
Be the first to comment on "হযরত মুহাম্মদকে (সাঃ) কটূক্তি,লোহাগড়ায় বাড়ি ভাঙচুর,অগ্নিসংযোগ"