শিরোনাম

অদক্ষ জনবলের কারণে বিমানবন্দরে সিডিউল বিপর্যয়

নিউজ ডেস্ক: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিডিউল বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ সিভিল অ্যাভিয়েশনের অদক্ষ জনবল। রোববার সিভিল অ্যাভিয়েশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর কারণ হিসেবে জানা যায়, বেশির ভাগ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার চাকরি জীবনে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন- আইএটিএ থেকে প্রশিক্ষণ নেননি। যে কারণে বিমান বন্দরে সিডিউল বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খল অবস্থা স্থায়ীরূপ ধারণ করেছে।

বিষয়টি উল্লেখ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এ সব সমস্যার কথা উল্লেখ করে সিভিল অ্যাভিয়েশনের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এহসানুল গনি চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিটি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘উক্ত বিশৃঙ্খল অবস্থার অবসান ঘটানোর নিমিত্তে আইএটিএ কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে দক্ষ জনবল তৈরির নিমিত্তে আলোচ্য প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।’

প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘বর্তমানে সকল আন্তর্জাতিক বিমান পরিচালনার পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহে বিদ্যমান সুযোগ সুবিধাদির ওপর ভিত্তি করে দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিমান সংস্থা কর্তৃক ফ্লাইট পরিচালিত হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ দিন ও রাতের বিভিন্ন সময়ে একই সাথে ২০-২২টি ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণ করে এবং অধিকাংশ সময় বিভিন্ন বিমান সংস্থার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়।

বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিচালিত বিভিন্ন বিমান সংস্থার শীত ও গ্রীষ্মকালীন সিডিউল দাখিল করার পর সিএবি কর্তৃক অনুমোদিত হয় যাতে সিডিউল পুনর্বিন্যাসের সুযোগ কম থাকে।

কেননা, বিমান সংস্থাসমূহ আইএটিএ এয়ারপোর্ট স্লট ক্লিয়ারেন্স এর আলোকে বিশ্বব্যাপী ফ্লাইট সিডিউল এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিডিউল দাখিল করে, যেখানে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাবে অত্র কর্তৃপক্ষ হতে আইটিএ এর মাধ্যমে এয়ারপোর্ট স্লট ক্লিয়ারেন্স প্রদান করা হয় না।’

ফ্লাইট সিডিউল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে চিঠিতে বলা হয়, ‘বিশ্বের সকল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহের স্লট বিন্যাস সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইএটিএ (ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন) বছরে দুইবার আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করে থাকে। উক্ত কনফারেন্সে সব দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিকট হতে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষসমূহ কর্তৃক বিমানবন্দরের স্লট বিমান সংস্থাসমূহকে প্রদান করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, এ যাবৎকাল এই প্রকার কনফারেন্সে অত্র কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন নাই যার ফলে প্রতিবছর বিমানের শিডিউল নিয়ে বিশৃঙ্খল অবস্থার অবতারণা হয়।’

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘যদি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহে আইএটিএ লেভেল-২ বা লেভেল-৩ ঘোষণা করা হয়, তবে উপযুক্ত প্রক্রিয়ার স্লট বিন্যাসের মাধ্যমে বিমান সংস্থাসমূহের সিডিউল পিক আওয়ারে ও অফপিক আওয়ারে বিন্যাসের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিমান পরিচালনা এবং যথাযথ যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাদি (যেমন- এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, রানওয়ে, গ্রাউন্ড, বোর্ডিং ব্রিজ, ব্যাগেজ বেল্ট ইত্যাদি) এর মধ্যে সমন্বয় সাধনপূর্বক অত্র কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্যাপাসিটি অ্যানালাইসিস করা হবে এবং উক্ত অ্যানালাইসিসের ওপর ভিত্তি করে লেভেল ঘোষণা করা হবে। ঘোষিত লেভেলের ওপর ভিত্তি করে বিমান সংস্থাসমূহের স্লট ক্লিয়ারেন্স প্রদান করা হবে। বিমানবন্দর লেভেল-৩ ঘোষিত হলে বিদেশি বিমান সংস্থার নিকট স্লট বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব।’

এ নিয়ে সিভিল অ্যাভিয়েশনের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ক্যাপ্টেন ইকরাম উল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে সাড়া পেলে কর্মরত কর্মকর্তাদের ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের নিয়মিত প্রশিক্ষণে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেন।

সূত্র: জাগো নিউজ

basic-bank

Be the first to comment on "অদক্ষ জনবলের কারণে বিমানবন্দরে সিডিউল বিপর্যয়"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*