নিউজ ডেস্ক : নতুন বছর আসছে। অনলাইনে মানুষকে শুভেচ্ছা জানানো বা নতুন শপিংয়ের জন্য হরহামেশাই অনলাইনে ঢুকবে মানুষ। কাজেই নিরপত্তার বিষয়টি নতুন করে ভাবতে হবে সবার। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে। এখানে কিছু পরামর্শ নিন বিশেষজ্ঞের।
যেখানে ভুল হয়: নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন এক ভুক্তভোগী। জানান, আমার সমস্যা শুরু হয় যখন ১০ বছর আগে একটা পাসওয়ার্ড দিয়ে তা আর বদলাইনি। মাইস্পেস খোলার সময় এই পাসওয়ার্ডটি ব্যবহার করতাম। কিন্তু খুব দ্রুত তা ভুলে যাই। একই পাসওয়ার্ড অন্যান্য স্থানেও ব্যবহার করি। মনে হচ্ছিল পাসওয়ার্ড বদলানো দরকার। কিন্তু অলসতা বা অবহেলার কারণে করা হয়নি। একই পাসওয়ার্ড একটু এদিক-ওদিক করে দেওয়াটা সহজ। একটা সময় থেকে আমার ডিজিটাল দুনিয়া ধসে পড়তে শুরু করলো। আমি কয়েক মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একজন যাদের অ্যাকাউন্টগুলো ডেটা ব্রিচের একটি সিরিজের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। হ্যাকাররা ক্রস-রেফারেন্স ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে বিভিন্ন ডেটাবেজ থেকে। একই পাসওয়ার্ড থাকলে তাদের পক্ষে তা বের করা সহজ। আমার ডেটাবেজও লিক হয়ে গেলো। আমি এখন কি করবো?
পাসওয়ার্ড বদলাতে থাকলাম। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে। কয়েক সপ্তাহ পর আমার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ওয়ালমার্ট থেকে হ্যাকাররা পণ্য কিনে ফেললো। ব্যাংক আর ক্রেডিট কার্ড প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার সময় কাটলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলে।
পাসওয়ার্ড ম্যানেজার: এই যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতার পর আমি পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করতে থাকলাম। এটা আমার জীবন বদলে দিলো। এর মাধ্যমে আপনার যাবতীয় পাসওয়ার্ড একটি ভল্টে জমা থাকবে যা মাস্টার পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে নিরাপদ রাখা হবে। তাই এমন একটি মাস্টার পাসওয়ার্ড ঠিক করুন যা মনে রাখবেন। বাকিগুলো ভেতরেই সুরক্ষিত থাকবে। আর মাস্টার পাসওয়ার্ড অবশ্যই সাধারণ হলে চলবে না। এমন সেবাপ্রদানকারী ৩টি অপশনের মধ্য আমার ভালো লাগলো লাস্টপাস। অনেক এক্সপার্টের কাছ থেকে চমৎকার রিভিউ পেয়েছে এটি। এর দামও অনেক কম।
তবে লাস্টপাস বা অন্যান্য পাসওয়ার্ড ম্যানেজার অ্যাপ নিয়ে একটিই অভিযোগ রয়েছে। তা হলো, আপনার পাসওয়ার্ডগুলোতে ঢুকতে কোনো না কোনো থার্ড-পার্টির মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। যদি তা কোনভাবে ভুল হাতে পড়ে তো কি হবে?
লাস্টপাস ২০১৫ সালে হ্যাকিংয়ের শিকার হয়। তবে ফলাফল আশঙ্কাজনক নয়। হ্যাকাররা ই-মেইল ঠিকানা, পাসওয়ার্ড রিমাইন্ডার এবং অন্যান্য কিছু তথ্যে ঢুকতে পেরেছে। কিন্তু তারা কখনোই পাসওয়ার্ড ডেটায় প্রবেশ করতে পারেনি।
এমন আরো কিছু সেবা মিলবে ১পাসওয়ার্ড, ড্যাশলেন এবং কিপাস থেকে।
নিজেকে রক্ষা করুন: পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন বা নাই করুন অনলাইনে নিজেকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা আছে।
১. একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। প্রত্যেক অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
২. পাসওয়ার্ডটি শক্তিশালী করুন। এর সম্পর্ক এখন সবারই ধারণা আছে। জটিল ক্যারেক্টার, প্রতীক চিহ্ন, বড় ও ছোট হাতের অক্ষরের সমন্বয় ঘটিয়ে কাজটি করুন।
৩. দুই স্তরের ভেরিফিকেশন ব্যবহার করুন। এতে করে হ্যাকারদের পক্ষে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। গুগল, ফেসবুক এবং টুইটার অ্যাকাউন্টে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
৪. যেকোনো অনলাইন অ্যাকাউন্ট থেকে পণ্য কেনাকাটার আগে গেস্ট হিসাবে প্রবেশ করুন। তারা হয়তো অ্যাকাউন্ট খুলতে বলবে। সেখানে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য দিতে বলবে তারা। কিন্তু তার আগে গেস্ট ইউজার হিসাবে প্রবেশ করে দেখুন।
সূত্র: সি নেট
Be the first to comment on "অনলাইন শপিংয়ে নিরাপদ থাকার উপায়"