শিরোনাম

অনেক বেশি নিরাপদ ও কার্যকর জন্মবিরতিকরণ ইঞ্জেকশন

নিউজ ডেস্ক : জন্মবিরকিকরণের জন্য ইঞ্জেকশন বেশ কার্যকর মাধ্যম বলে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এটা খুব বেশি প্রচলিত নয়।

সাধারণত ইন্ট্রা-ইউট্রেনাইন কন্ট্রাসেপটিভ ডিভাইস (আইইউসিডি), ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল এবং কনডম ব্যবহার বহুল প্রচলিত। ইঞ্জেকশন সম্পর্কে তেমন ধারণাও নেই মানুষের। এবার ভারতের রাজস্থান সরকার বিনামূল্য এগুলো প্রদান করবে। জনসংখ্যার চাপ নিয়ন্ত্রণে এই ব্যবস্থাটি বেশ কার্যকর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচলিত জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতির পরিবর্তে ইঞ্জেকশন অনেক বেশি কার্যকর হবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। ইন্ট্রা-ইউট্রেনাইন কন্ট্রাসেপটিভ ডিভাইস (আইইউসিডি), ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল এবং কনডম ব্যবহারের পদ্ধতিগুলোর স্থান দখল করতে পারে ইঞ্জেকশন পদ্ধতি। একজন নারী তখনই গর্ভধারণ করতে পারেন যখন পুরুষের শুক্রাণু তার ডিম্বাণুতে পৌঁছায়। জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি ডিম্বাণু ও শুক্রাণুকে এক হওয়ার পথে বাধা দেয়। আর এ কাজে ডিম্বাণুর উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইঞ্জেকশন এ কাজে বেশ পারদর্শী।

ইঞ্জেকশনটিতে রয়েছে প্রোজেস্টেরন। এটি সের্ভিক্সের মিউকাসকে ঘন করে দেয়। ফলে শুক্রাণু ডিম্বাণু অবধি পৌঁছতে পারে না। এ ছাড়া ডিম্বাণু নির্গমনের পথও বন্ধ করে দেয়।

এর কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা নিন।

১. যদি সঠিকভাবে ইঞ্জেকশনটি দেওয়া হয়, তবে এটা ৯৯ শতাংশেরই বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে একজন নারীও গর্ভধারণ করবেন না।

২. ইঞ্জেকশনটির ধরন অনুযায়ী তা ৮, ১২ বা ১৩ সপ্তাহ পর্যন্ত কাজ করে থাকে। একবার নিয়ে এই সময় পর্যন্ত পিল গ্রহণ বা অন্যান্য পদ্ধতি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

৩. অনেক নারী অয়েস্ট্রোজেন সমৃদ্ধ জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন না। তাদের জন্য ইঞ্জেকশন পুরোপুরি নিরাপদ।

৪. অন্যান্য ওষুধ খাওয়া হলেও এটা তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না।

৫. গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাশয়ের ক্যান্সার এবং পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিস প্রতিরোধে কাজ করে ইঞ্জেকশনটি।

আগামী বছরের এপ্রিলে ভারতের মহারাষ্ট্রের ১৪টি জেলায় এগুলো প্রদান করা হবে। কেন্দ্রিয় সরকারের মিশন পরিবার বিকাশের অধীনে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

ন্যাশনাল হেলথ মিশনের পরিচালক নবীন জৈন জানান, ইঞ্জেকশনটির নাম ‘অন্তরা’। এতে রয়েছে ডিওক্সি মেডরক্সি প্রোজেস্টেরন অ্যাসিটেট (ডিএমপিএ)। এই উপাদানটি জন্মবিরতিকরণের কাজ করবে তিন মাস পর্যন্ত। যেকোনো নারী বছরে চার বার এই ইঞ্জেকশন নিতে পারবেন। এটি ব্যবহারের পর অন্য কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারবে না। ইঞ্জেকশনটি হাত ও নিতম্বে নেওয়া যাবে। ডিম্বাশয় থেকে ডিম নির্গমনে বাধা দেয় এই ইঞ্জেকশন।

রাজস্থানের রিপ্রোডাক্টিভ অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ পরিচালক ড. ভিকে মাথুর জানান, ইঞ্জেকশনটি পুরোপুরি নিরাপদ। তবে নিয়মিত মাসিক চক্রের ওপর প্রভাব ফেলাই এর একমাত্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। প্রথম কয়েক মাসে অনেকের ওজন বৃদ্ধির সমস্যাও হতে পারে।

জয়পুরের মহাত্মা গান্ধী হসপিটালের অবস্টেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনেকোলজি বিভাগের প্রধান ড. সোয়াতি গার্গ বলেন, ইঞ্জেকশনটি দারুণ কাজের। এটি ২০ বছর ধরে বাজারে রয়েছে। কিন্তু এর প্রয়োগ তেমন নেই। যেকোনো নারী একবার নিলেই তিন মাস নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। তবে এতে মাসিক চক্র কিছুটা বাধাগ্রস্ত হবে। অবশ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

ইউনিয়ন হেলথ মিনিস্ট্রি এক বিবৃতিতে বলে, মিশন পরিবার বিকালের মূল লক্ষ্য হলো উন্নত পরিবার পরিকল্পনার পথ খুলে দেওয়া। সঠিকভাবে জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতির প্রয়োগও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। গত মাস থেকেই এই পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

ড. মাথুর আরো জানান, সুষ্ঠু পরিবার পরিকল্পনাব্যবস্থা ইনফ্যান্ট মর্টালিটি রেট (আইএমআর) এবং ম্যাটার্নাল মর্টালিটি রেট (এমএমআর) নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সূত্র: এনএইচএস এবং হিন্দুস্তান টাইমস

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "অনেক বেশি নিরাপদ ও কার্যকর জন্মবিরতিকরণ ইঞ্জেকশন"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*