নিউজ ডেস্ক : অপু আমার একমাত্র ছেলে। তাকে হারিয়ে আমি সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি। এখনই ব্যবস্থা নিন যাতে আমার মতো আর কোনও মায়ের বুক খালি না হয়। কথাগুলো বলছিলেন সিলেটে বোমা বিস্ফোরণে নিহত ওয়াহিদুল ইসলাম অপুর মা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, দেশ থেকে সব জঙ্গি নির্মূল করুন। নইলে আরও অনেক মায়ের বুক খালি হবে। সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জালোপাড়ার চাঁদনীঘাট গ্রামে অপুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার মা বিলাপ করছেন। প্রতিবেশী, স্বজনরাও যেন সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।
বিস্ফোরণে নিহত অপুর বাবা দুই বছর আগে মারা গেছেন। চার ভাইবোনের মধ্যে অপু সবার বড়। বড় বোন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) সমাজকর্ম বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। আর ছোট দুই বোন স্কুলে পড়ালেখা করছে। অপু নিজে ছিলেন মদন মোহন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শাবিতে অধ্যয়নরত অপুর বোন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার ভাইকে হারিয়ে ফেলেছি। তার এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহল নামে পাঁচতলা বাড়ির নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে জানতে পারে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ওই বাড়ির ভেতর থেকে গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। পরে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াতকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো দল। পরে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় আতিয়া মহলের পাশে দুই দফা কাউন্টার অ্যাটাকে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হন যার মধ্যে অপুরও ছিলেন। ওই হামলায় অপুর চাচাতো ভাই পাপ্পু আহত অবস্থায় সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও আহত হয়েছেন র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানসহ অন্তত ৫০ জন।
Be the first to comment on "‘একমাত্র ছেলে হারিয়ে আমি সব হারিয়ে ফেলেছি’"