নিউজ ডেস্ক : রাজধানী গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলা ঘৃণ্য অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের রোল মডেল তখন এই ধরনের হামলা করা হয়েছে। এমন কাজ যারা করেছে, এটি ঘৃণ্য অপরাধ। তারা তো মসজিদে নববীতেও বোমা হামলা করেছে। যারা ধর্মের নামে এসব করছে, তাদের কোনো ধর্ম নেই। তারা জান্নাত তো দূরের কথা জাহান্নামে জায়গা পাবে না।
ধর্মের নাম ব্যবহার করে জঙ্গিকাণ্ড হচ্ছে মত দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তারা এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে ইসলাম ধর্মের মতো শান্তির ধর্মকে বিশ্বের দরবারে অবমাননা করছে। হেয় করছে। এর চেয়ে দুঃখের বিষয় কিছু হতে পারে না। মানুষ যেসময় এশার নামাজ পড়তে যায়, তারাবির নামাজ পড়তে যায়, ঈদের নামাজ পড়তে যায়, সেসময় তারা নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালায়। মানুষ হত্যা করে। তারা কখনও ইসলাম ধর্মের অনুসারী হতে পারে না। এরা মানুষের ঘৃণা ছাড়া কিছু পাবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামলাকারীরা দেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছে। এরা উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে। কেন এমনটি ঘটছে তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আওয়ামী লীগ জঙ্গি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবসময় যে ঘোষণা দিয়ে আসছে, তা এখনও বলতে চাই। এদেশে আমরা জঙ্গিবাদের স্থান হতে দেবো না। আমরা চাই বাংলাদেশ হবে শান্তিপূর্ণ দেশ।
দেশে যখন অর্থনৈতিক উন্নয়ন চলছে তখনই এমন হামলা মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল থেকে শুরু করে সর্বস্তরে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে, বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে উঠেছে বিশ্বে, এদেশের ভাবমূর্তি যখন বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, তখনই এ হামলা চালানো হয়েছে। এদের উদ্দেশ্য এই উন্নত বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা, এদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা। আলোর পথ থেকে দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া। এ জঙ্গি-সন্ত্রাস মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
আমাদের মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন-ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব-অভিভাবক-প্রশাসনিক কর্মকর্তা-জনপ্রতিনিধি-সমাজসেবক-ব্যবসায়ী-সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে জঙ্গি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। দেশে এখন খাবারের জন্য হাহাকার নেই। আমরা জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছি। শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করেছি। দেশের মানুষের যখন এভাবে কল্যাণ হচ্ছে। দেশে স্বস্তি ফিরেছে যখন, যখন মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরেছে, তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের বাঙালি জাতিকে বিশ্বের সামনে যেমন হেয় করছে তারা। তারা ইসলামকেও হেয় করছে। আমাদের পবিত্র ধর্মকে হেয় করছে, এটা আমরা মেনে নেবো না।
তিনি বলেন, কাল (মঙ্গলবার) চারটি বিভাগের কর্মকর্তাসহ সবার সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরও বলেছি, সবাইকে বলছি আমরা জঙ্গিবাদবিরোধী কমিটি নিয়ে সকলে একযোগে কাজ করবো। কীভাবে জঙ্গি-সন্ত্রাসী কাজ করে তা খুঁজে বের করবো। অভিভাবকদের বলবো, নিজেদের সন্তানদের খোঁজ নেবেন, কীভাবে চলে, কোথায় যায়, কাদের সঙ্গে মেলামেশা করে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেবেন। জঙ্গিবাদবিরোধী কমিটির সঙ্গে মিলে খোঁজ নেবেন সব দিকে। এলাকায় নতুন কেউ এলে কোথা থেকে এসেছে তা জানতে হবে। অবাঞ্চিত কাউকে দেখলে তার পরিচয় বের করবেন।
Be the first to comment on "গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলা ঘৃণ্য অপরাধ: প্রধানমন্ত্রী"