নিউজ ডেস্ক॥ সাউদাম্পটন। টাইটানিকের শহর। এই শহর থেকেই ১৯১২ সালে যাত্রা করেছিল টাইটানিক জাহাজ। এরপর হারিয়ে গেছে চিরতরে। এখনো এই শহরে প্রতিবছরই তাদের স্বজনরা আসেন। এ ইতিহাস ছোট-বড় সবার জানা। তবে, আসল কথা হলো- সেই টাইটানিকের ঘাটেই নোঙ্গর ফেলেছে বাংলাদেশ! শেষ তিন ম্যাচে সেমিফাইনাল যাত্রার কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে এখান থেকেই। কাল টাইগাররা নিজেদের সপ্তম ম্যাচে মাঠে নামবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
বলার অপেক্ষা রাখে না এই ম্যাচে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল জয়ের উল্লাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। তবে টাইগারদের শেষ দুই ম্যাচ ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। এই দুই ম্যাচেও জিততে হবে কাঙ্খিত লক্ষ্য পুরণে। এরপরও থাকছে নানা সমীকরণের বেড়াজাল। আর সেটি না হলে বাংলাদেশের বিশাল বড় স্বপ্নের জাহাজ হারিয়ে যাবে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে!
তবে বাংলাদেশ দল প্রবলভাবে এখনো বিশ্বাস রাখছে শেষ তিন ম্যাচে জিতে সেমিফাইনালে খেলার। কারণ ক্রিকেট বলে কথা। এখানে সমীকরণ বদলাতে খুব একটা সময় লাগে না। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তানও কম নয়। এখন পর্যন্ত ম্যাচ না জিতলেও তারা হাল ছাড়ার পাত্র নয়। এই বিশ্বকাপে অন্তত একটি হলেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে চায় তারা। যে কারণে সেই মরণ কামড় যে কোন দলের উপর বসাতে পারে। তাই কাল রোজ বোল কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আফগানদেন সঙ্গে বেশ সতর্কতার সঙ্গেই লড়াইয়ে নামতে হবে টাইগারদের। কারণ এখানে তারা এরই মধ্যে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছে। তাই উইকেটটাও তাদের চেনা।
অন্যদিকে রোজ বোল স্টেডিয়ামের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ১৫ বছর আগের। ২০০৪ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রাজিন সালেহর নেতৃত্বে এখানে প্রথম খেলেছিল বাংলাদেশ দল। ক্যারিবীয়রা ৩ উইকেটে ২৬৯ রান করে। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ হেরেছিল ১৩৮ রানে। তবে সেই দলের কেউই নেই বাংলাদেশের বর্তমান বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। সেই হারের স্মৃতির স্বাক্ষী হয়ে এবার ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ম্যানেজার হিসেবে দলের সঙ্গে আছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তবে তিনি এখানে লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে আছেন এখনো। দলের সব ব্যাটসম্যান যখন ক্যারিবীয়দের বোলিং তোপে মাঠ ছাড়ছিলেন তখন তিনি দাড়িয়ে ছিলেন প্রাচীর হয়ে। শেষ পর্যন্ত ৩৪ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন খালেদ মাহমুদ। দ্য রোজ বোল ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ার কাউন্টিতে অবস্থিত। ২০০১ সাল থেকে এই মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বেশ কয়েকটি ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছিল রোজ বোল কর্তৃপক্ষ। এই মাঠের গ্যালারির দর্শকধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার।
গতকাল স্থানীয় সময় দুপুর দুইটায় রোজ বোল স্টেডিয়ামে অনুশীলনে নামে বাংলাদেশ দল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হার টাইগারদের জন্য এই বিশ্বকাপে আরো একটি আফসোসের নাম। ৩৮২ তাড়া করে মুশফিকুর রহীমের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ৩৩৩ রানে থামে টাইগাররা। নিজেদের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান স্কোর বোর্ডে তুলে হারের আফসোস ছাড়া মিলেনি কিছুই। সেই জন্য অবশ্য দলের বোলিং ও ফিল্ডিং ব্যর্থতাই আন্যতম কারণ। সেই ম্যাচে অবশ্য দলের দুই সেরা পারফরর্মার একাদশেই ছিলেন না। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও পেসার সাইফুদ্দিন ইনজুরি কারণে ছিলেন একাদশের বাইরে। আর তাদের জায়গা নিতে এসে পেসার রুবেল হোসেন ও ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান দারুণ ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই আফগানদের বিপক্ষে ফের একাদশে যে পরিবর্তন আসবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
Be the first to comment on "টাইটানিকের ঘাটে টাইগারদের নোঙ্গর"