শিরোনাম

পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা

নিউজ ডেস্ক : সকাল পৌনে ৯টা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেনের নিজ ভোটকেন্দ্র শরিফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভোটগ্রহণে সংশ্লিষ্টদের কেউ বসে আছেন, কেউ বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করছেন। দুই হাজার ২৭০ ভোটারের এই কেন্দ্রে তখন মাত্র সাতটি ভোট পড়েছে বলে জানালেন প্রিসাইডিং অফিসার তাপস রায়।

সকাল সাড়ে ১০টায় দিরাই পৌর শহরের দিরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেল। তিন হাজার ১০০ ভোটারের এই কেন্দ্রের ছয়টি বুথে ওই সময় মাত্র ২০টি ভোট পড়েছে বলে জানান প্রিসাইডিং অফিসার শরিফুল ইসলাম। সকাল পৌনে ১১টায় এ কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. জয়া সেনগুপ্তা। দুপুর ১২টায় দিরাই পৌর শহরের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। সেখানেও ভোটারের উপস্থিতি কম। তবে যারা ভোট দিতে এসেছেন তারা জানালেন ভোটদানে তাদের কেউ প্রভাবিত করেননি। তারা পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দিতে পেরেছেন।

উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামের ষাটোর্ধ রাহেলা বেগম গত আটটি জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। বেলা সাড়ে ১২টায় তিনি দিরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে। এই নারী জানান, তিনি তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। একই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা এইচএসসি পরীক্ষার্থী দুই বান্ধবী রোমা মোদক ও অপর্না চন্দ। এবার তারা নতুন ভোটার। তারা জানান, প্রথমবারের মতো পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে আনন্দিত তারা। প্রগতিশীল ও মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত রয়েছেন এমন প্রার্থীকেই তারা প্রথম ভোট দিয়েছেন। তাদের প্রার্থী বিজয়ী হলে এলাকার রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য তারা দাবি জানাবেন বলে জানান।

হারানপুর গ্রামের ভোটার নয়নতারা দাস (৬০) বলেন, “ইবার ভোটারর মাঝে সাড়া কম। তাছাড়া বৃষ্টির কম মানুষ ভোট দিতো আইছে। ” তিনি বলেন, “কেউ আমরারে জোর কইরা ভোট দিতে কয় নাই। আমরা পছন্দের প্রার্থীরেই ভোট দিছি। ” হারানপুর গ্রামের প্রবীণ ভোটার সাইফ উল্লাহ দুপুর ১টায় ভোট দিয়েছেন দিরাই মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি জানালেন, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন তিনি। ভোট দিতে তাকে কেউ প্ররোচিত করেনি। তিনি শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট দিতে পেরেছেন।

সুনামগঞ্জ ২ আসন (দিরাই-শাল্লা) দুটি উপজেলা, একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। দুই লাখ ৫২ হাজার ৪৩০ ভোটারের এ এলাকার ১১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৯৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

নির্বাচনে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর তিন হাজার ২৫৭ জন সদস্য টহল দিচ্ছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ১০ জন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। এ পর্যন্ত কোনও প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে কোনও অভিযোগ করেননি।

উল্লেখ্য, এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ড. জয়া সেনগুপ্তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেন রেজু মিয়া। গত ৫ ফেব্রুয়ারি বর্ষীয়ান রাজনীতিক সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা গেলে তৃণমূলের সমর্থনের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ তার স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্তাকে দলীয় সমর্থন দেয়। তার সঙ্গে এ আসনে জাসদের দুই অংশের দুই প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেন রেজু মিয়া মনোনয়ন জমা দিয়ে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*