নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আমরা সমর্থন পেয়েছি, সকলের যৌথভাবেই সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ। কাজেই গুলশান জঙ্গি হামলার ঘটনায় মদদদাতা, পরিকল্পনাকারী, অর্থায়নকারী ও প্রশিক্ষণদাতাদের খুঁজে বের করা খুব বেশি কঠিন হবে না।’
বুধবার নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী দস্তগীরের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এক সময় আমরা এদের তথ্য পাব এবং তাদের শাস্তি দিতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘যারা এর সঙ্গে জড়িত, ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে কয়েকজন মারা গেছে। বাকি কয়েকজনকে আমরা শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। তা ছাড়া আজকে বিভিন্ন টেলিভিশনে বেশ কিছু মানুষের ছবি দেখাচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখাচ্ছে। কাজেই এদের কয়েকজন শনাক্ত হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাকিদের শনাক্তের জন্য আমি সবাইকে আহ্বান করব, যেন এই তথ্যগুলো আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়। তাহলে যারা জড়িত তাদেরকে তো শনাক্ত করা যাবেই, পাশাপাশি পর্দার আড়ালে যারা, যারা এর মদদদাতা এবং পরিকল্পনাকারী, প্রশিক্ষণ প্রদান করছে, অর্থ যারা দিচ্ছে তাদেরকেও খুঁজে বের করতে হবে। তারা আমাদের দেশের হোক, বিদেশের হোক যেখানকার হোক, তাদের খুঁজে বের করা অবশ্যই আমাদের কর্তব্য।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর প্রত্যেকেই কিন্তু আমাদের এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের পাশে আছে এবং এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন অর্থনৈতিক মন্দা। এটা সত্ত্বেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজকে সারাবিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।’
এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তসীর গাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এতে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন শিল্প ও সেবাখাতে বিনিয়োগের লক্ষ্যে ইকোনমিক জোনস প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অ্যাক্ট ২০১০ প্রণয়ন এবং বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরটি (বেজা) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিনিয়োগবান্ধব নতুন শিল্পনীতি ঘোষণা করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আমি ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নকাজ উদ্বোধন করেছি। ইতিমধ্যে ৭৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। সরকার ও ব্যক্তিখাত সম্মিলনে অবকাঠামো খাতসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করার জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অথরিটি করা হয়েছে। এ সকল খাতে বিনিয়োগ করার জন্য পিপিপি গাইডলাইনস প্রণয়ন করা হয়েছে। এর ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে।’
দেশে ২ লাখ ৮০ হাজার গৃহহীন পরিবার রয়েছে
ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজমের অফর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাঠ প্রশাসনের তথ্যমতে দেশে ২ লাখ ৮০ হাজার গৃহহীন পরিবার রয়েছে। আগামী ২ বছর ৮ মাসের মধ্যে ২ লাখ ৮০ হাজার গৃহহীন পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২ দশমিক ১০ লাখ গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০ হাজার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত গৃহায়ণ তহবিলের মাধ্যমে ২০ হাজার গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের কার্যক্রম সম্পান্ন করা হবে।’
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট
নওগাঁ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. ছলিম উদ্দিন তরফদারের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল সংশোধন আইন ২০১৫-এর মাধ্যমে জিটুজি ভিত্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। চীন সরকার চট্টগ্রামের আনোয়ারা, জাপান সরকার নারায়ন গঞ্জের আড়াইহাজার/গাজীপুরের নয়নপুর এবং ভারত সরকার বাগেরহাটের মংলা এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় তাদের বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে।
Be the first to comment on "‘পরিকল্পনাকারী-অর্থদাতাদের খুঁজে বের করা হবে’"