নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর রায়েরবাজারে বাসিন্দা সোহাগ মিয়া বেলা ১১টার দিকে জরুরি কাজে আগারগাঁও এলাকায় এসেছেন। কিন্তু যাতায়াতের দুর্ভোগের সঙ্গে প্রচণ্ড গরম যোগ হওয়ায় নিস্তেজ হয়ে পড়েছেন।
“যানজটের এ শহরে গাড়িতে চলাচল করা এক কষ্টকর অভিজ্ঞতা; তার ওপর ঢাকায় যে গরম পড়েছে, তাতে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে কোথাও যাওয়াই মুশকিল। এ বছরে গত ক’দিনে এমন অতিষ্ঠ গরম আর পাইনি। এখন ঘরে-বাইরে সমান গরম, যেন আগুনের হল্কা,” বলেন তিনি।
রোববার এমন অসহনীয় গরম রাজধানীর বাইরেও বয়ে গেছে। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা তাপপ্রবাহে রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এসময় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় অসহনীয় গরম অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলমান তাপপ্রবাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। এর মধ্যে দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হলেও রাজধানীতে সহসাই বৃষ্টির আভাস নেই। এজন্য রাজধানীবাসীকে অপেক্ষায় থাকতে হতে পারে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ফরিদপুর, রাজশাহী, মংলা, সাতক্ষীরা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
চাঁদপুর, নোয়াখালী ও শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসহ রংপুর ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে।
রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে, ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস জানান, গত কয়েক বছর ধরেই এপ্রিলে এমন গরম অনুভূত হচ্ছে। ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠেছিল ঢাকার তাপমাত্রা।
“এপ্রিলের শেষার্ধে মাথার উপরে সূর্যকিরণ থাকে, এমন রোদে আর্দ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হয় বেশি। অস্বস্তিকর আবহাওয়া বিরাজ করে প্রায় সবখানে।”
তিনি জানান, এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু জায়গায় এবং বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকাসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসময় কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।
“দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অনেক এলাকায় মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটা অস্বাভাবিক নয়। বৈশাখের মাঝামাঝি এসে এমন আবহাওয়া থাকেই। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও ঢাকায় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পরে। মে মাসের শুরুতে বৃষ্টি হতে পারে রাজধানীতে,” বলেন রুহুল কুদ্দুস।
তাপদাহের বিষয়ে আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি বুলেটিনেও বলা হয়েছে, এপ্রিল মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) এবং অন্যত্র এক থেকে দুটি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৩৮ এর চেয়ে বেশি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

Be the first to comment on "বৃষ্টির ‘সুখবর’ নেই আরও কয়েকদিন"