নিউজ ডেস্ক: মহিলা কলেজ বলে রাজধানীর গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে দিনের আলোতেই বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ শুক্রবার রাতে বহিরাগত নারী-পুরুষ নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে জাঁকজমকপূর্ণভাবে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করলেন ছাত্রলীগের এক নেত্রী। আছেন হবু বরও। রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো এ নেত্রীর নাম মাসুমা আক্তার পলি। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এমন পরিস্থিতিতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন কলেজের হলে থাকা সাধারণ ছাত্রীরা। তারা বলছেন, যেখানে ছাত্রী কলেজ হওয়ায় দিনের বেলাতেও পুরুষদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেখানে সন্ধ্যারাতে ক্যাম্পাসে অবাধে পুরুষ প্রবেশ করছে। এতে তারা চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন। তবে ছাত্রলীগ নেত্রী বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না।
অন্যদিকে, প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা আরো বলেন, কলেজের নিয়ম অনুযায়ী কেউ বিয়ে করলে হোস্টেল থেকে তার সিট কেটে দেওয়া হয়। কিন্তু ছাত্রলীগের অনেকেই প্রভাব খাটিয়ে বিবাহিত হয়েও হোস্টেলে থাকেন। আর এবার কলেজের মিলনায়তনেই আয়োজন করা হলো বিয়ের।
এ বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শামসুন নাহারের সঙ্গে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এমনকি সাংবাদিক পরিচয়ে পাঠানো ক্ষুদে বার্তারও (এসএমএস) কোনো জবাব দেননি তিনি।
কলেজের ভিতরে দেখা যায়, জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে কলেজের অভ্যন্তরে চলছে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। ফটকে লাগানো হয়েছে মরিচ বাতি। আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে হল অডিটোরিয়াম। গায়ে হলুদের স্টেজ এখানে। স্টেজের ঠিক উপরে লেখা ‘সাইফ ও পলির গায়ে হলুদ’। মহা ধূমধাম করে চলা এ গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন দুই পরিবারের অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম রেজা, আমিনুল ইসলাম, চৈতালী হালদার চৈতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মিঠুন দাসসহ অনেকে নেতা।
আমন্ত্রিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন। তবে তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেননি।
এদিকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগের কোনো নেতা বা নেত্রীর বিয়ে করার সুযোগ নেই। এছাড়া সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ঘটনায় ইতিপূর্বে পদ থেকে বহিষ্কারেরও নজির রয়েছে। ছাত্রলীগের এই নেত্রীর ব্যাপারে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কিনা- সেই প্রশ্নের উত্তরে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘২৪ জুলাই তার (পলি) বিয়ে। এর আগে যদি কলেজ ক্যাম্পাসে সে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেটি দেখার দায়িত্ব কলেজ প্রশাসনের।’
ছাত্রলীগের প্রভাব খাটানোয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না- সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, এটি সম্পূর্ণভাবে কলেজ প্রশাসনের বিষয়।
সূত্র: জাগো নিউজ
Be the first to comment on "মহিলা কলেজে ছাত্রলীগ নেত্রীর গায়ে হলুদ : পুরুষরাও উপস্থিত"