লোহাগড়ায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হাত-পা বিচ্ছিন্ন, ১৮ জনের নামে মামলা

রাশেদ জামান,লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি ॥ লোহাগড়ায় বিএনপির সাধারন সম্পাদকে কুপিয়ে হাত-পা বিচ্ছিন্ন ঘটনায় ১৮জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন তার স্ত্রী।
জানা গেছে, পূর্ব বিরোধের জের ধরে লোহাগড়া পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক ও খলিশাখালি গ্রামের মৃত মান্নান মোল্যার ছেলে জলিল মোল্যাকে (৫২) গত ২৭ জুলাই সকালে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে একটি হাত বিচ্ছিন্ন ও একটি পা অর্ধ বিচ্ছিন্ন করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে খুলনাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি যশোরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় আহতের স্ত্রী অম্বিয়া বেগম বাদী হয়ে একই গ্রামের মৃত রশিদ কাজীর ছেলে সাহিদ কাজীকে প্রধান আসামী করে ৩১ জুলাই লোহাগড়া থানায় ১৮ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৩৩। সম্প্রতি গত ১৭জুলাই খলিশাখালি জামে মসজিদের ব্যাটারি চুরির ঘটনায় জলিল মোল্যার ভাই খলিল মোল্যার ছেলে সুলতান মোল্যাকে পুলিশ ব্যাটারিসহ আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করেন। বিষয়টি নিয়ে বিবাদমান দু’টি পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে রক্তপাতের ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খলিশাখালি গ্রামের বিএনপি একজন নেতা বলেন, আধিপত্য বিস্তর ও পূর্ব শত্রুতার জেরে জহুর কাজী সমর্থিত লোকজনের মধ্যে জলিল মোল্যা সমর্থিত লোকজনের প্রায় এক দশক ধরে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের জের ধরে বিগত ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী জহুর কাজীর ভাই আশরাফ কাজী খুন হয়। খুনের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাসরিন বেগম বাদী হয়ে পরদিন ১৬ ফেব্রুয়ারী জলিল মোল্যাসহ ৩৩ জনের নামে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৬। মামলাটি জহুর কাজী পরিচালনা করতেন। মামলা চলা কালিন প্রতিপক্ষ জলিল মোল্যা সমর্থিত একদল দুবৃত্ত ২০১৫ সালের ১৮ আগষ্ট সন্ধ্যায় জহুর কাজীর ডান হাত কেঁটে বিচ্ছিন্ন করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জহুর কাজী বাদী হয়ে একই বছরের ২১ আগষ্ট জলিল মোল্যাকে প্রধান আসামী করে ৬ জনের নাম উল্লেখ ও ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২২। তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন, জলিল মোল্যার নেওয়া-দেওয়া। এটা তার জন্য প্রাপ্য ছিল।
এদিকে বিএনপি নেতা জলিল মোল্যার ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মো: টিপু সুলতানসহ স্থানীয় নেতারা।
লোহাগড়া থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম, মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে।