লোহাগড়ায় শিক্ষককে গাছে বেঁধে নির্যাতন ॥ প্রধান আসামী গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক॥  নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের মালোপাড়ায় চাঁদার দাবীতে শিক্ষককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনার প্রধান আসামী মনিরুল মোল্যা (৪০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১নভেম্বর) সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার লাহুড়িয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর কমল কুমার পাল’র নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার রোনগর গ্রাম থেকে মনিরুল মোল্যাকে গ্রেফতার করেছেন। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাকে বুধবার দুপুরে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে এবং পলাতক আসামীদের আটকের জোর চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গতঃ উপজেলার জয়পুর ইউপি’র মরিচপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও লাহুড়িয়া মালোপাড়ার মনি কুমার বিশ্বাস (৪১) কে গত ২ অক্টোবর রাতে লাহুড়িয়া বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথে লাহুড়িয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আকবর ওরফে মিলিটারী আকবর ও একই গ্রামের মনিরুল মোল্যার নেতৃত্বে আনিচুর, রবিউল, আমিনুর ও সুদে আমিনুর ওই শিক্ষককে লাহুড়িয়া-নড়াইল সড়কের ওপর থেকে ধরে নিয়ে মনিরুলের বাড়ির মেহগনি গাছের সাথে বেঁধে ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবীতে রাত ৩টা পর্যন্ত বেধড়ক মারপিট করে। পরে সন্ত্রাসীরা তার স্ত্রীকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য খবর দেয়। খবর পেয়েস তার স্ত্রী শিক্ষিকা বাসনা রানী প্রতিবেশী ত্রিনাথ ও পরিমলকে সাথে নিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা তাদের হাতে তুলে দেয় এবং সাড়ে ৪ লাখ টাকার একটি চেক ও একটি ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে স্বামীকে মুক্ত করেন। সন্ত্রাসীদের অব্যহত হুমকির কারনে ৪ দিন নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ থাকায় চিকিৎসা ও মামলা করা সম্ভব হয়নি। ৬ অক্টোবর বিকালে সাংবাদিকরা বিষয়টি জানার পর পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করলে ঘটনার ৪ দিন পর ৬ অক্টোবর রাতেই নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহত শিক্ষককে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী বাসনা রানী বাদী হয়ে ৬ অক্টোবর রাতে ৬ জন কে আসামী করে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর ৭ অক্টোবর এজাহার ভূক্ত আসামী রবিউল ইসলাম (৪১) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার ৬ জন আসামীর মধ্যে দু’জন গ্রেফতার এবং দু’জন আদালতে আত্মসর্মাপন করেছে। তবে সন্ত্রাসীদের নেওয়া নগদ ৫০ হাজার টাকা, সাড়ে ৪ লাখ টাকার একটি চেক ও স্বাক্ষর যুক্ত একটি ফাঁকা ষ্ট্যাম্প এখনও পুলিশ উদ্ধার করতে পারে নাই।