নিউজ ডেস্ক ॥ নড়াইলের লোহাগড়া পৌর এলাকার সিঙ্গা গ্রামে রামজান শেখ (৬) নামে এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার বিকেলে ওই গ্রামের একটি বাগানের পাশে নালায় তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিশুটির বাবা ইলিয়াছ হোসেন ইলু শেখ ও মামা ইউছুফ শেখকে আটক করেছে পুলিশ।
সরেজমিন জানা যায়, শিশুটি সিঙ্গা-মশাঘুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণীতে পড়ত। বুধবার সকালে স্কুলে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাড়ির পাশে নালার মধ্যে তার লাশ পাওয়া যায়। শিশুটির ‘মা’ বুদ্ধি প্রতিবন্ধি মাবিয়ার সঙ্গে বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক ইলিয়াছ হোসেন ইলুর অবৈধ সম্পর্কের জেরে রমজানের জন্ম হয়। মাবিয়া পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে সামাজিক চাপে বিগত ২০১৩ সালের ৬জুন মাবিয়াকে বিয়ে করতে বাধ্য হন ইলু। বিয়ের পাঁচ মাস পর রমজানের জন্ম হলে প্রথম স্ত্রী তহমিনার চাপে পড়ে মাবিয়াকে তালাক দেয় ইলু। গত তিন বছর আগে রমজানের ভরণ-পোষণ ও বিচ্ছেদের আনুতোষিক টাকার দাবি করে মাবিয়ার পরিবার মামলা করেন নড়াইলের পারিবারিক আদালতে। আদালত শিশু রমজানের ১৮বছর বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণ-পোষন ব্যবদ প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা আদালতে জমা রাখা ও মাবিয়ার খোরপোষের টাকা প্রদানের নির্দেশ দেয়। টাকা দিতে না পারায় গ্রেফতারী পরোয়ানায় একাধিকবার কারাভোগ করেছেন ইলু শেখ। গত আড়াই বছর আগে মাবিয়ার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পর আদালতে শিশু রমজানের নামে জমাকৃত টাকায় নানা হাবিবর ও নানী আয়শা বেগম তাকে লালন-পালন করে আসছেন। হাবিবর শেখের একটি ছেলে ও ছয়টি মেয়ে রয়েছে। মেয়ে লাকি বেগম স্বামীর সাথে বণিবনা না হওয়ায় পাঁচ বছরের ছেলে সন্তান নিয়ে পিত্রালয়েই থাকেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতে সন্দেহভাজন হিসাবে ইলুকে পুলিশ হেফাজতে নিলে কার প্রথম স্ত্রী তহমিনা বেগম ঘর তালাবদ্ধ করে কৌশলে সটকে পড়েন। খবর পেয়ে রাতেই লোহাগড়া থানার ওসি এবং বৃহস্পতিবার সকালে যশোর পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেষ্টিগেন (পিবিআই) ইন্সপেক্টর একেএম ফসিহুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই শরীফুল ইসলাম, এসআই জিয়াউর রহমান ও এনসিও তৌহিদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তথ্য ও আলামত সংগ্রহ করেছেন।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোকাররম হোসেন বলেন,‘উভয় পরিবার সন্দেহের তালিকায় রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে তার নানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনও মামলা কোন মামলা হয় নাই।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় ৬ বছরের শিশু হত্যা ॥ পুলিশ হেফাজতে বাবা-মামা,‘পলাতক মা’"