নিউজ ডেস্ক ॥ নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএম রাশেদুল হাসান রাশেদকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত ১০ টার দিকে পৌর শহরের লক্ষ্মীপাশা চৌরাস্তা এলাকা থেকে তিনি গ্রেফতার হন। রাশেদ লোহাগড়া পৌর শহরের খলিশাখালী গ্রামের গোলাম রসুল মোল্যার ছেলে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৬ আগষ্ট উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পার-মল্লিকপুর গ্রামের নূর ইসলাম মৃধা ও ইকবাল হোসেন মৃধাকে গ্রাম্য কোন্দলের জেরে প্রতিপক্ষরা কুপিয়ে হত্যা করে। ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ হাসান ওই মামলার আসামি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পারমল্লিকপুর গ্রামে ঠাকুর এবং মৃধা বংশের মধ্যে প্রায় দেড়’শ বছর ধরে বংশানুক্রমে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে বিগত ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নূর ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায় ঠাকুর পক্ষীয় লোকজন। হামলায় নূর ইসলাম ও ইকবাল মৃধা হত্যার শিকার হয়। এ ঘটনায় নূর ইসলামের স্ত্রী রোকসানা বেগম বাদী হয়ে একই বছরের ১৯আগষ্ট ৪৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আসামি করে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং জিআর ১৬৯/১৬। রাশেদ এজাহার নামীয় ৩৯ নং আসামি ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পারমল্লিকপুর গ্রামের কয়েকজন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা এই প্রতিনিধিকে জানান, রাশেদ লোহাগড়া এলাকায় তেমন একটা থাকেনা। বেশিরভাগ সময়ে জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি নিয়ে বাস্ত থাকেন। দলীয় কোন কার্যক্রম থাকলে তবেই এলাকায় আসেন। বিগত ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই লোহাগড়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কালিন সময়ে বেশ কয়েকদিন এলাকায় ছিলেন। সে মেয়র প্রার্থী শরীফুল ইসলামের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা চালায়। নির্বাচনে শরীফুল পরাজিত হলে সহিংসতা এড়াতে ২৮ জুলাই রাতে রাশেদ লোহাগড়া এলাকা ত্যাগ করেন। হত্যার বিষয়টি একই বছরের ১৬ আগষ্ট। হত্যার আগে ও পরে রাশেদ লোহাগড়ায় ছিলেন না। মুলত মৃধা বংশের গ্রাম্য দলে অধিকাংশ বিএনপি জামায়াত সমর্থীত লোকজন। রাশেদের নেতৃত্বে লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের শক্ত অবস্থান থাকায় আওয়ামীলীগ বিরোধী জোট দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছে। রাশেদের বাড়ি পৌর শহরের খলিশাখালী গ্রামে। ঘটনাস্থল ও গ্রাম্য কোন্দল ভিন্ন ইউনিয়নে। শুধুমাত্র লোহাগড়া আওয়ামী ছাত্র রাজনীতিকে দাবিয়ে রাখতে ওই ইউনিয়নের জামায়াত বিএনপির কতিপয় নেতারা কৌশলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করেছেন। মামলার তখনকার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কেএম জাফর আলী দীর্ঘ তদন্ত শেষে রাশেদের নামে আদালতে ফাইন্যাল প্রতিবেদন দাখিল করেন। বাদীপক্ষ ওই প্রতিবেদনে না রাজি দেওয়ায় মামলাটিতে রাশেদের নামে জারি হয় গ্রেফতারী পরোয়ানা। সোমবার রাতে লোহাগড়া থানার ওসি আলমগীর হোসেন, রাশেদকে গ্রেফতার করে রাতেই নড়াইল সদর থানা হাজতে প্রেরন করেন।
লোহাগড়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ধৃত আসামীকে কৌশলগত কারনে সোমবার রাতে নড়াইল সদর থানা হাজতে প্রেরন। মঙ্গলবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্ররন করা হয়েছে।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় মিথ্যা মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার"