নিউজ ডেস্ক : জমে উঠেছে নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভা নির্বাচন। অন্তহীন জনদুর্ভোগ এ পৌরসভায় মেয়র পদে এবার তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা পৌরসভার উন্নয়ন, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত এবং পৌরবাসীর দুঃখ-দুর্দশায় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। আগামী ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। এখানকার ভোটাররা প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট দিবেন। ভোট নিয়ে সব বয়সের মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট আগ্রহ। ভোটাররা মেয়র পদে পরিবর্তনসহ মাদক, মাদকের পৃষ্টপোষকতা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিমুক্ত উন্নত নাগরিক সেবা চায়। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে জমে উঠেছে নির্বাচনি মাঠ। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা। সব মিলিয়ে সরগরম লোহাগড়ার তৃণমূলের রাজনীতি।
সরেজমিনে লোহাগড়া পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পৌর এলাকায় সর্বত্র বইছে নির্বাচনী হওয়া। প্রার্থীরা লিফলেট বিতরণ, পোস্টার সাঁটিয়ে, ব্যানার টানিয়ে ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী মাঠে নিজেদের প্রার্থী হওয়ার খবর জানাচ্ছেন। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চলাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনী আলোচনায় মুখরিত পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান।
নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন হলেন আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মসিয়ুর রহমান (নৌকা), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বর্তমান মেয়র আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো:আশরাফুল আলম (জগ), বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত মো: মঈনুল হাসান কাজল (হাতুড়ী-কাস্তে) প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। লোহাগড়ায় স্থানীয় রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকলেও পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সেই মতবিরোধ এখন আর চোখে পড়ছে না। নেতাকর্মীরা বলছেন এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করার জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করছেন। করছেন সভা সমাবেশ, দিচ্ছেন আধুনিক পৌরসভা গড়ার প্রতিশ্রুতি। দিনরাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ মসিয়ুর রহমান বলেন, তার পিতা মরহুম সৈয়দ মোশাররফ হোসেন জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পরে তিনিও চেয়ারম্যান নির্বচিত হয়ে সাধারণ মানুষের আশার প্রতিফলন ঘটিয়ে গরীব এবং মেহনতি মানুষের পাশে থেকেছেন। তাই এখানকার ভোটাররা নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। বিগত দিনে পৌরসভায় উল্লেখযোগ্য কোনও উন্নয়ন হয়নি। সবাই শুধু সাধারণ মানুষকে আশার কথা শুনিয়েছেন। আমি নির্বাচিত হলে, লোহাগড়া পৌরসভা হবে বাসযোগ্য একটি আধুনিক মডেল পৌরসভা।
‘জগ’ প্রতীকের আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র আশরাফুল আলমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে রিং হলেও তিনি রিসিভ করেন নাই।
বাংলাদেশ ওর্য়াকার্স পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো: মঈনুল হাসান কাজল বলেন, যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয় তবে তিনি জয়লাভ করবেন বলে আশাবাদি।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: ওয়ালিউল্লাহ বলেন, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু এবং প্রভাবমুক্ত করার জন্য সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে ইভিএম-এ যেন সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেন সেই লক্ষ্যে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন কক্ষে আগামী ২৫ অক্টোবর বিকাল ৪টায় প্রার্থী, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সুশিল সমাজ এবং ৩১ অক্টোবর কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ডামি ভোটিংয়ের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। মেয়র পদে ৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪০ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার ২৩ হাজার ৭৩৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৫৭৭ জন এবং মহিলা ভোটার ১২ হাজার ১৬০ জন। আগামী ২ নভেম্বর ৯টি ওয়ার্ডে ১১টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
Be the first to comment on "লোহাগড়া পৌর নির্বাচন,মুখরিত প্রচারনা"