লোহাগড়া সরকারী কলেজ মাঠের জলাবদ্ধতা ॥ বছরের ৮মাস পানির নিচে

লোহাগড়া সরকারী কলেজ মাঠের জলাবদ্ধতা ॥ বছরের ৮মাস পানির নিচে

নিউজ ডেস্ক ॥  নড়াইলের লোহাগড়া সরকারী আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি বছরের আট মাসের অধিক সময় থাকে পানির নিচে। কলেজের প্রায় তিনহাজার শিক্ষার্থী ছাড়াও উপজেলা সদরের অন্তত ১৫-২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত মাঠটি জলাবদ্ধ থাকায় বন্ধ রয়েছে ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আয়োজন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আনিচুর রহমান ও মিলু শরীফ জানান, ওই কলেজ ছাড়াও লোহাগড়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, মিতালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার প্রায় ১৫-২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ মাঠ ব্যবহার করত। সনাতন ধর্মালম্বীদের রথ ও উল্টোরথ যাত্রাসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো এ মাঠে। শিক্ষা বিভাগের আয়োজনে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীদের বাছাই পর্বের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হতো এ মাঠে। শারীরিক ব্যায়াম করতে উপজেলা সদর ও আশপাশের লোকজন এ মাঠ ব্যবহার করতেন। বিকেল-সন্ধ্যায় উন্মুক্ত বাতাসে বসে শিশু, কিশোর, যুব-বৃদ্ধদের গল্প-আড্ডার আসর বসতো এই মাঠে। গত তিন বছর যাবত বছরের অধিকাংশ সময় জলাবদ্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন,শিক্ষার্থী,অভিভাবকসহ স্থানী সকল মহলের লোকজন ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজের দক্ষিণ পাশে বিশাল এ মাঠ। মাঠের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে চলাচলের রাস্তা এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বাড়িঘর। মাঠে পানি থৈথৈ করছে। মাঠজুড়ে কচুরিপনা ও ঘাসের ঝোপ। মনে হচ্ছে কোন ডোবা পুকুর। পানি পচে দুর্গন্ধ হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এ মাঠের পানি নিষ্কাশনের চারটি কালভার্ট ছিল। অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনা গড়ে ওঠায় কালভার্টগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে এ জলাবদ্ধ নিরসন করা সম্ভব।
মাঠের পাশের বাসিন্দা সৈয়দ আকরাম আলী জানান, গত মে মাস থেকে এ পর্যন্ত মাঠটি পানির নিচে রয়েছে । আরো অন্তত দুই মাস পানি থাকবে। পানি পচে দুর্গন্ধ হওয়ায় পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা খুবই সমস্যায় রয়েছেন। ব্যাপকহারে বেড়েছে মশার উপদ্রব।
লোহাগড়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক দিলীপ চক্রবর্তী বলেন, জাতীয় শীতকালীন অ্যাথ্্লেটিকস প্রতিযোগিতায় টানা নয়বার দেশসেরা হয়েছে। এর প্রশিক্ষণ সকাল-বিকাল এ মাঠেই হতো।
স্থানীয়রা জানান, মাঠের গুরুত্ব বিবেচনা করে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার গত ৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে এসেছিলেন। তিনি মন্ত্রণালয়ে দরখাস্ত করতে বলেছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ এনামুল কবীর বলেন, মন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছি। এছাড়া গত তিন বছর ধরে নানা মহলে ধরনা দিয়েছি। কিন্তু ফলাফল কিছুই হয়নি।
লোহাগড়া পৌর মেয়র মোঃ আশরাফুল আলম জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প আকারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া যাবে। বরাদ্ধ পেলে অগ্রাধীকার ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "লোহাগড়া সরকারী কলেজ মাঠের জলাবদ্ধতা ॥ বছরের ৮মাস পানির নিচে"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*