শিরোনাম

ইরানি প্রেসিডেন্টের হুঙ্কার

ইরানি প্রেসিডেন্টের হুঙ্কার

ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে বিদেশী বাহিনীর বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসব সেনাবাহিনীকে প্রত্যাহার করে নিতে বলেছেন। যদি তারা ওই অঞ্চলে অব্যস্থান করে তাহলে বিপদের মুখোমুখি হতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি। বুধবার টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা বিপদের মুখে আছে। আগামীদিনে ইউরোপীয় সেনারা বিপদের মুখোমুখি হতে পারে। তবে কি রকম বিপদ, কোন কোন দেশের জন্য তিনি এমন সতর্কতা বা হুঙ্কার দিলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার পর এবারই প্রথম সরাসরি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর প্রতি হুমকি দিলেন রুহানি। ২০১৫ সালে ৬ বিশ্বশক্তির সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘনের যে ঘোষণা দিয়েছে তেহরান, তাকে চ্যালেঞ্জ করেছে বৃটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি।
এর একদিন পরেই এমন মন্তব্য করলেন হাসান রুহানি। ইউরোপীয় দেশগুলো মঙ্গলবার ঘোষণা করে যে, ওই চুক্তি মেনে চলতে তারা তেহরানের বিরুদ্ধে ‘ডিসপিউট মেকানিজম’ প্রয়োগ করবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

এমনিতেই মধ্যপ্রাচ্য যেন একটি বারুদের বাক্স হয়ে আছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেখানে যখন তখন যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ জন্য ইরানকে দায়ী করে ওয়াশিংটন। কিন্তু ইরান এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। তবে জানুয়ারির প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার এক ভয়াবহ প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। কিন্তু দৃশ্যত তা অনেকটা থিতিয়ে গেছে। এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ইরান যে হুমকি দিচ্ছে তাতে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা ভাবাচ্ছে। মার্কিন সেনাদের পাশাপাশি ইউরোপীয়ান বাহিনীর সেনা মোতায়েন করা আছে ইরাক , আফগানিস্তানে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবু ধাবিতে একটি নৌঘাঁটি রয়েছে ফ্রান্সের। ওদিকে বাহরাইনে একটি ঘাঁটি চালু করেছে বৃটেন।

হুমকির বিষয়ে কর্মকর্তারা অবহিত বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইউরোপীয়ান কমিশনের মুখপাত্র পিটার স্টানো। বলেছেন, হুমকি সত্ত্বেও ইরাক ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের। ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লরেঞ্জো গুইয়েরিনি তার দেশের আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, হরমুজ প্রণালীতে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে তার দেশ। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী আনেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ের বুধবার অঘোষিতভাবে জর্ডানের আজরাক ঘাঁটি পরিদর্শনে যান। সেখানে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মোতায়েন করা হয়েছে জার্মান সেনাদের। এ ছাড়া ইরাকি সেনাদের প্রশিক্ষণ শুরু করতে চায় জার্মানি।

ওদিকে পারমাণবিক চুক্তির বদলে একটি নতুন চুক্তির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রস্তাব দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিকে। তবে তিনি সে প্রস্তাবকে উদ্ভট আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন বলে তার সমালোচনা করেন তিনি। ট্রাম্পকে একজন মহান চুক্তির রূপকার হিসেবে প্রশংসা করে মঙ্গলবার বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ট্রাম্পকে ফোন করেন ইরানের পারমাণবিক চুক্তির পরিবর্তে একটি নতুন চুক্তি করতে, যাতে ইরান কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে। তবে ইরান বলে, তারা কোনো বোমা বানাচ্ছে না।

এরই মধ্যে বুধবার দিনশেষে ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হয় যে, সরকার বিরোধী বিক্ষোভে উপস্থিতি নিয়ে বিরোধে ইরান ছেড়েছেন বৃটিশ রাষ্ট্রদূত রবার্ট ম্যাকেয়ার। ইরানের রাষ্ট্র পরিচালিত বার্তা সংস্থা ইরনা খবর প্রকাশ করেছে যে, রবার্ট ম্যাকেয়ারকে আগেভাগে নোটিশ দেয়ার পর তিনি ইরান ছেড়েছেন। ওদিকে বৃটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নিয়মিত সফরের অংশ হিসেবে লন্ডন গিয়েছেন ম্যাকেয়ার। এ সফর আগে থেকেই পরিকল্পনায় ছিল।
আপনার মতামত দিন

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "ইরানি প্রেসিডেন্টের হুঙ্কার"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*