কেন বন্ধ তালা, ক্ষোভ কর্মীদের

নিউজ ডেস্ক : জাঁতাকলে পড়া ইঁদুরের মতো ছটফট করছিল মানুষগুলো।

এক বার আপৎকালীন সিঁড়ির দিকে, এক বার র‌্যাম্পের দিকে। বন্ধ ছিল দু’টোই— বলছেন ভুক্তভোগীরা। শেষমেশ সকলে ছুটে যান বাড়ির মাঝ বরাবর এক মাত্র সিঁড়ির দিকে।

তিনতলা থেকে ওই সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে আয়া কাবেরী সরকার মারা যান বলে দাবি সহকর্মীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতি থিতিয়ে যাওয়ার পরে আপৎকালীন সিঁড়ির দরজার তালা খোলা হয়।

আপৎকালীন দরজার পাশে থাকা মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে কাজ করেন আয়া ঝুমা রায়, রিঙ্কু রায়েরা। তাঁরা বলেন, ‘‘আগুন লাগলে লিফট বন্ধ থাকবে, সেটা জানি। তাই আগুন লাগার কথা শুনে প্রথমে আমাদের ওয়ার্ডের পাশে থাকা আপৎকালীন সিঁড়ির কাছে ছুটে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি, ওই সিঁড়ির দরজা তালাবন্ধ।’’ সেখান থেকে তাঁরা ছুটে যান ওই ভবনের মাঝামাঝি থাকা সিঁড়ির কাছে। ওই আয়ারা

বলেন, ‘‘সেখানের ভিড় আর হুড়োহুড়ি দেখে র‌্যাম্পের কাছে ছুটে যাই। কিন্তু সেখানেও দরজায় তালা বন্ধ ছিল।’’

বাধ্য হয়ে তাঁরা একমাত্র খোলা থাকা সিঁড়ির দিকে ছুটে যান। ওই আয়ারা বলেন, ‘‘ফলে বাধ্য হয়ে সেই সিঁড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে মামনি সবার পায়ের তলে চাপা পড়ে মারা যায়।’’ ওই সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে মারা গিয়েছেন পলাশি থেকে এসে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অভিজিৎ হাজরার মা উজ্জ্বলা হাজরাও। অভিজিতের স্ত্রী দীপান্বিতার আক্ষেপ, ‘‘হুড়োহুড়ো সইতে পারেননি আমার শাশুড়ি। লোকের পায়ের তলায় চাপা পড়ে মারা গেলেন আমাদের চোখের সামনেই।’’

আপৎকালীন সিঁড়ি ও র‌্যাম্প তালাবন্ধ থাকার কথা অবশ্য মানতে নারাজ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ও সহ-অধ্যক্ষ প্রভাসচন্দ্র মৃধা। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন আগুন লাগার সময়ে আপৎকালীন সিঁড়ি ও র‌্যাম্পের তালা বন্ধ ছিল বলে রটেছে। কিন্তু আমরা তদন্ত করে দেখেছি, এটা গুজব মাত্র। দু’টোই খোলা ছিল।’’

তা হলে, ওই সিঁড়ি বা র‌্যাম্প দিয়ে না নেমে একটাই সিঁড়িতে সকলে গুঁতোগুঁতি করতে গেলেন কেন, সেই প্রশ্নের সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "কেন বন্ধ তালা, ক্ষোভ কর্মীদের"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*