নিউজ ডেস্ক : নিউ ইয়র্কে কবি শহীদ কাদরীর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা; বিষাদমাখা ভালবাসায় জানিয়েছেন শেষ বিদায়।
রবিবার স্থানীয় সময় বিকালে কুইন্সের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার শহীদ কাদরীর জানাজা হয়। কবির ইচ্ছায় তার মরদেহ বাংলাদেশে নেওয়া হবে বলে কবিপত্নী নীরা কাদরী জানিয়েছেন।
নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে মারা যান ৭৪ বছর বয়সী শহীদ কাদরী। উচ্চ রক্তচাপ ও জ্বর নিয়ে সাত দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. শামীম আহসান জানান, আজ সোমবার স্থানীয় সময় রাতে একটি ফ্লাইটে কবির মরদেহ নিউ ইয়র্ক থেকে ঢাকায় পাঠানো হবে।
“দুবাই হয়ে বুধবার সকালে মরদেহ ঢাকা পৌঁছাবে। কফিনের সঙ্গে কবির ছেলে আদনান কাদরী ঢাকা যাচ্ছেন। অন্য একটি ফ্লাইটে ঢাকায় রওনা হবেন তার স্ত্রী।”
মরদেহ বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া এবং দাফন পর্যন্ত সব ব্যয় বাংলাদেশ সরকার বহন করবে বলে জানান শামীম।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী সব কাজ হচ্ছে।”
পঞ্চাশ পরবর্তী বাংলা কবিতায় আধুনিক মনন ও জীবনবোধ সৃষ্টিতে যে কজন কবি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন, তাদের মধ্য অন্যতম শহীদ কাদরী। আধুনিক নাগরিক জীবনের সুখ-দুঃখ, প্রেম, স্বদেশচেতনার পাশাপাশি বিশ্ব-নাগরিক বোধের সম্মিলন ঘটে তার কবিতায়। নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে শহীদ কাদরীর জানাজার পর মোনাজাত।
‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’ ও ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ এই চারটি কাব্যগ্রন্থ দিয়েই বাংলার জনপ্রিয় কবিদের একজন শহীদ কাদরী। ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি ও ২০১১ সালে তাকে একুশে পদক দেওয়া হয়।
১৯৪২ সালের ১৪ অগাস্ট কলকাতায় জন্ম নেওয়া শহীদ কাদরী সাতচল্লিশে দেশভাগের পর বাংলাদেশে আসেন।
১৯৭৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশের বাইরে তিনি। জার্মানি, ইংল্যান্ড হয়ে ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন শহীদ কাদরী। গত পাঁচ বছর ধরে হুইল চেয়ারে চলছিল তার চলাফেরা।
দেশে আনার পর কবির মরদেহ শহীদ মিনারে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। এরপর তাকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
Be the first to comment on "নিউ ইয়র্কে কবি শহীদ কাদরীকে শেষ শ্রদ্ধা"