নিউজ ডেস্ক : অজানা সংখ্যক নৌসেনা বহনকরী তুর্কী নৌবাহিনীর ১৪টি জাহাজ এখনো নিখোঁজ রয়েছে। জাহাজগুলোর কমাণ্ডাররা গত শুক্রবারের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনাকারীদের দলভুক্ত এবং এরাও দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের মডারেট ইসলামপন্থী সরকারকে উৎখাতে বিদ্রোহ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এরদোয়ান সরকারের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী গণতান্ত্রিক সংস্কারপন্থী ধর্মতাত্বিক-রাজনৈতিক নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারীরা শুক্রবারের ওই ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালায়।
শুক্রবারের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টার পর থেকেই তুরস্কের নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল ভেইসেল কোসেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
তার ভাগ্যে আসলে কী ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে অভ্যুত্থানচেষ্টার সময় ষড়যন্ত্রকারীরা তুরস্কে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে এই ভয় দেখিয়ে তাকে কোনো জাহাজে উঠিয়ে অপহরণ করে থাকতে পারে। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো থেকে এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবারের অভ্যুত্থানচেষ্টার সময় ওই ১৪টি জাহাজ এজিয়ান বা কৃষ্ণ সাগরে সক্রিয় ডিউটিতে নিযুক্ত ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে জাহাজগুলো আর নৌ সদর দপ্তরের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি বা বন্দরেও ফিরে আসেনি।
সন্দেহ করা হচ্ছে জাহাজগুলো হয়তো গ্রিসের বন্দরগুলোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শনিবার আট বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তা একটি হেলিকপ্টারে চড়ে গ্রিসে আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে গিয়েছিল।
তুরস্কের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, আদালত এ পযর্ন্ত সেনা ও নৌবাহিনীর ৮৫ জন জেনারেল ও অ্যাডমিরালকে জেলে পাঠিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনো চুড়ান্ত রায় দেওয়া হয়নি। এছাড়া আরো ডজনখানেক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন, বিমানবাহিনীর সাবেক কমান্ডার জেনারেল আকিন ওজতুর্ক, জেনারেল আদেম হুদুদি যিনি তুরস্কের দ্বিতীয় সেনাবাহীনির কমাণ্ডার; যার বাহিনীটি সিরিয়া, ইরান ও ইরাক থেকে আসা সম্ভাব্য কোনো হুমকি মোকাবেলার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অটোমান অ্যান্ড টার্কিশ স্টাডিজ ইনিশিয়েটিভ বিভাগের পরিচালক মোস্তফা মিনাউয়ি বলেন, তুরস্কের গত শুক্রবারের ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সরকারের জন্য একটি উপহার স্বরুপ। এটি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে সব ধরনের বিরোধীদের কঠোরহস্তে দমণের জন্য সব ধরনের ন্যায্যতা এনে দিয়েছে। এর ফলে এরদোয়ান সরকার আরো বেশি কতৃত্ববাদি হওয়ার পথেই পা বাড়াবে। যে প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই অনেক দুর এগিয়েছে। আর এরদোয়ান সরকারের ক্রমাগত কর্তৃত্ববাদি হয়ে ওঠার প্রতিক্রিয়া হিসেবেই গত শুক্রবারের ওই ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে। সূত্র: দ্য ইন্ডিপিন্ডেন্ট
নৌপ্রধানসহ তুর্কী নৌবাহিনীর ১৪ জাহাজ নিখোঁজ

Be the first to comment on "নৌপ্রধানসহ তুর্কী নৌবাহিনীর ১৪ জাহাজ নিখোঁজ"