শিরোনাম

ম্যারাডোনার ষড়যন্ত্রে মেসিকে নিষিদ্ধ!

নিউজ ডেস্ক : বলিভিয়ার বিরুদ্ধে প্রাক-বিশ্বকাপের ম্যাচে নামার মাত্র ৬ ঘণ্টায় ৪ ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করা হয় লিওনেল মেসিকে। আর অধিনায়ক মেসিকে ছাড়া বলিভিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নেমে ২-০ গোলে ম্যাচে হেরে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে পুরোপুরি বিপাকে আর্জেন্টিনা।

এদিকে এবার চাঞ্চল্যকরভাবে মেসি বিতর্কে নাম জড়িয়েছে দিয়েগো ম্যারাডোনার। আর্জেন্টিনার স্থানীয় কিছু কাগজে দাবি করা হয়েছে, ম্যারাডোনার সম্মতি নিয়েই মেসিকে ৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা। যার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইনফান্তিনো আবার দিয়েগো-ঘনিষ্ঠ। ম্যারাডোনা নিজেও ফিফার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। তাই গোটা বিতর্কে ম্যারাডোনার ভূমিকাই এখন আতসকাচের তলায়। ম্যারাডোনার উদ্দেশে সাবেক ফুটবলার চিলাভার্টের তোপ, ‘এই সময় ম্যারাডোনা কোথায়? ওর তো মেসির পাশে থাকা উচিত ছিল। ‘

মেসি বনাম ম্যারাডোনা
ফুটবলসম্রাটের সঙ্গে ফূটবল রাজপুত্রের দ্বৈরথ অজানা নয়। দুই তারকার বৈরিতা বিভিন্ন সময়ই ফুটবল দুনিয়ার শিরোনামে ছিল। যুদ্ধে প্রথম আক্রমণ করে ম্যারাডোনার মন্তব্য ছিল, ‘মেসিকে বড্ড বেশি আরামে রাখা হয়। মনে রাখতে হবে, ও বাকিদের মতোই। ওকে আলাদা করে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে কেন?’ গত বছর ফ্রান্সে প্রদর্শনী ম্যাচে খেলার পর পেলের সঙ্গে আড্ডায় মেসিকে তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু, জানতেন না মাইক্রোফোনে ধরা পড়েছে তার সমস্ত মন্তব্য। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের মতে, পেলে ম্যারাডোনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘মেসিকে মানুষ হিসেবে তোমার কি ভালো মনে হয়?’ প্রশ্নের উত্তরে ক্ষোভ উগরে ম্যারাডোনা বলেন, ‘আরে, ওর তো ভালো লিডার হওয়ার মতো মশলাই নেই। ওর কোনো ব্যক্তিত্বই নেই। নেতা হিসেবে ওকে ভাবা যায় না। ‘

প্রচারের আলো!
গরমাগরম শিরোনাম সৃষ্টির জন্য বিখ্যাত ম্যারাডোনার মুখে মেসি-নিন্দা আর্জেন্টিনায় তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ওই মন্তব্যের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিলির বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন মেসি। এবার ৪ ম্যাচের জন্য মেসিকে ফিফা নিষিদ্ধ করার পর কাকতালীয়ভাবে ফের প্রশ্ন উঠেছে দিয়েগো ম্যারাডোনার ভূমিকা নিয়ে। আর্জেন্টিনা ফুটবলের একাংশ এই দাবিও করেছে, যতই ৪ ম্যাচের নির্বাসন থাকুক। ম্যারাডোনার হস্তক্ষেপে তা কমবেই। এবং এভাবেই প্রচারের আলো নিজের দিকে টানছেন ফুটবল রাজপুত্র।

মেসির ভবিষ্যৎ
অন্যদিকে, রাশিয়া বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসির ভবিষ্যৎ নিশ্চিত নয়। এই বিশ্বকাপই সম্ভবত মেসির শেষ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিশ্বের সেরা ফুটবলারের তকমা পেলেও কোনোদিন বিশ্বকাপ না ছোঁয়ার আফসোস যে মেসির রয়েছে, তা অজানা নয়। রাশিয়ার পর কাতার বিশ্বকাপে তাই মেসিকে না দেখার সম্ভাবনাই বেশি। এমন অবস্থায় মেসিহীন আর্জেন্টিনা যোগ্যতা বাছাই পর্বে ধাক্কা পাওয়ায় মেসির বিশ্বকাপ স্বপ্ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

মেসি-শূন্য আর্জেন্টিনা!
এদিকে, মেসি-শূন্যতায় ভুগতে থাকা আর্জেন্টিনা যখন বলিভিয়ার কাছে পরাজিত হল, তখন ৩-০ এ প্যারাগুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন পর্বে জায়গা নিশ্চিত করে ফেলল ব্রাজিল। এদিন ম্যাচে ব্রাজিলের হয়ে নিজের ৫২তম আন্তর্জাতিক গোল করেন নেইমার। এদিকে, বলিভিয়ার বিরুদ্ধে হারের পর আর্জেন্তিনার সামনে এবার উরুগুয়ে, ভেনিজুয়েলা এবং পেরু। এই ম্যাচগুলোতেও খেলতে পারবেন না লিও মেসি। নীল-সাদা ব্রিগেডের চিন্তার আরও কারণ রয়েছে। কারণ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলির গ্রুপে কলম্বিয়া, ইকুয়েডর ও চিলি ৬টি করে ম্যাচ জিতে ভালো অবস্থানেই রয়েছে।

শাস্তি নিয়ে প্রশ্ন
মেসিকে ৪ ম্যাচে নির্বাসন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী কোচ সিজার মেনোত্তি বলেছেন, ‘অনিচ্ছাকৃত ফাউল করে যেখানো মাত্র ২টি ম্যাচ সাসপেন্ড হয়। সেখানে রেফারির সঙ্গে হাত না মেলানোর জন্য ৪ ম্যাচ নির্বাসন মানা যায় না। ‘

ঘটনার সূত্রপাত, গত বৃহস্পতিবার চিলির বিরুদ্ধে ম্যাচের সময়। ব্রাজিলিয়ান লাইন্সম্যানকে গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে লিওনেল মেসির বিরুদ্ধে। গোটা ম্যাচেই রেফারিদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন মেসি। তাই ম্যাচ শেষে তাদের সঙ্গে হাত মেলাতেও অস্বীকার করেন তিনি। ভিডিও ফুটেজে এই ঘটনা দেখার পর মেসির বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা। ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানার সঙ্গে ৪ ম্যাচে নির্বাসিত করা হয় মেসিকে। যদিও মেসিকে এতবড় শাস্তি দেওয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে বিভিন্ন মহলে। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যমের অভিযোগ, রেফারির রিপোর্টে গালি দেয়ার অভিযোগ ছিল না। তা সত্ত্বেও এত বড় অভিযোগ কেন? তবে কি এর পিছনে কোনো অদৃশ্য হাত রয়েছে?

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "ম্যারাডোনার ষড়যন্ত্রে মেসিকে নিষিদ্ধ!"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*