নিউজ ডেস্ক : গেরিলা বিপ্লবী ও বিশ্বব্যাপী সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক ফিদেল কাস্ত্রো পুঁজিবাদী রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের থাবার মধ্যে থেকেও ছোট রাষ্ট্র কিউবাকে ইতিহাসের স্বর্ণশিখরে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমৃত্যু অগ্রাহ্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রকে। রাজনীতি থেকে কখনও অবসর না নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া কিউবার সাবেক এ প্রেসিডেন্ট শুক্রবার ৯০ বছর বয়সে মারা যান।
রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন না বলেছিলেন, কিন্তু ২০০৬ সালের জুলাই মাসে জরুরী ভিত্তিতে অন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পর ভাই রাউল কাস্ত্রোর কাছে সাময়িক ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি। ২০০৮ সালে পুরোপুরি ক্ষমতা থেকে অবসর নেন।
রাউল কাস্ত্রোর শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কিউবার বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটতে থাকে। ওয়াশিংটনের সাথে হাভানার সম্পর্কের ক্রমেই উন্নতি ঘটে। এরপর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে তিনি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন।
ফিদেলের কথা মনে হলেই সামনে যে চিত্রটি উঠে আসে তা হলো গায়ে জলপাই রংয়ের পোশাক, গালভর্তি দাঁড়ি আর ঠোঁটে চুরুট রাখা কাস্ত্রোর কথা। স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়ার পর থেকে তাকে আর জনসমক্ষে খুব একটা দেখা যায়নি।
১৯৫৯ সালে সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে কিউবায় মার্কিন সমর্থিত একনায়ক ফুলদেগন্সিও বাতিস্ততাকে উৎখাত করে যুক্তরাষ্ট্রের নাকের ডগায় একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিশ শতকের কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো। একইসঙ্গে ক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমৃত্যু বৈরি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আর একের পর এক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই কাস্ত্রো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাথা নত করেননি বিপ্লবী এ রাষ্ট্রনায়ক।
স্নায়ুযুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মার্কিন নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদের জয়জয়াকারের মধ্যেও সমাজতান্ত্রিক কিউবাকে টিকিয়ে রেখে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রবাদ পুরুষ হিসেবে পরিচিতি পান।
১৯২৬ সালের ১৩ আগস্ট কাস্ত্রোর জন্ম হয়। তাঁর বাবা ছিলেন অভিবাসী স্প্যানিশ এবং মা কিউবার নাগরিক। ছোটবেলা থেকে খুব দ্রুত সবকিছু শিখতে পারতেন কাস্ত্রো। বেসবল খেলাতেও ছিল দারুণ উৎসাহ। কথিত আছে, ইউএস বিগ লিগে খেলার স্বপ্ন ছিল কাস্ত্রোর।
Be the first to comment on "যুক্তরাষ্ট্রকে আমৃত্যু অগ্রাহ্য করা বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রো"