শিরোনাম

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ঢাকা

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সহায়তা কামনা করে মিয়ানমারের সীমান্ত রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারীদের সামাজিক পুনর্মিলন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ঢাকায় আহুত বিদেশী দূতদের এক জরুরি বৈঠকে সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সমস্যাসহ দীর্ঘদিনের এই সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সহায়তা কামনা করেন।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি নিজ নিজ সরকারের দৃষ্টিতে আনতে কূটনীতিকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ভূখন্ডে রাখাইন মুসলমানদের অনুপ্রবেশে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বৈঠকে মন্ত্রী মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্পর্কের ওপর বিদেশী কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিফিং অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইইউ, ব্রিটেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, ভারত এবং চীন এবং ইউএনআরসি, আইওএম ও ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধিরা যোগ দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী সম্ভাব্য সকলভাবে মিয়ানমারকে সহায়তা করতে ঢাকার গভীর আগ্রহ সম্পর্কে কূটনীতিকদের অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশের এই উদ্যোগে যথাযথ ভূমিকা রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সেদেশের প্রতি আহ্বান জানানোর একদিন পর বিদেশী কূটনীতিকদের এই ব্রিফ করা হলো।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে বিশেষ করে সদ্য নির্বাচিত এনএলডি সরকারের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ও বজায় রাখতে বলিষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে।
পররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ বছরের ৯ অক্টোবর মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার পর বাংলাদেশ মায়ানমার সরকারকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায়।’
তিনি বলেন, একটি দায়িত্বশীল প্রতিবেশী হিসাবে বাংলাদেশ এই হামলার কেবল নিন্দাই করেনি, সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার ও গোয়েন্দা তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে মায়ানমার সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ও দেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দূতগণ ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে দুর্গত লোকদের সহযোগিতার অনুরোধের প্রেক্ষিতে অবদান রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়ক মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর অসামাঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের কারণে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির অব্যাহত অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এদিকে আলী আশা প্রকাশ করেন যে, শিগগিরই মায়ানমার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং বাংলাদেশী অস্থায়ী শরণার্থী হিসাবে আগতরা নতুন সহিংসতা ও প্রতিশোধপরায়নতার আতংক ছাড়াই তাদের নিজ দেশে ফেরত যেতে পারবে।
মায়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বৌদ্ধ অধ্যুষিত পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে সৃষ্ট নতুন সংকটের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশের জন্য গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মায়ানমারের রাষ্ট্রদূত মেও মিয়ান্ট থেনকে ডেকে পাঠায় এবং রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানায়।
কার্যত সীমান্ত বন্ধ থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে শত শত রোহিঙ্গা প্রতিবেশী দেশে প্রবেশ করছে।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ঢাকা"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*