নিউজ ডেস্ক : আপনারা অসৎ! আপনারা মিথ্যাবাদী! প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প এভাবেই একহাত নিলেন মার্কিন বৈদ্যুতিন চ্যানেল এবং সংবাদপত্রের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সাংবাদিককে। সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে এমন আক্রমণের মুখোমখি হতে হবে ভাবেননি কেউই।
ম্যানহাটনের ট্রাম্প টাওয়ারে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক ছিল ট্রাম্পের। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের উল্লেখযোগ্য মুখ হিসেবে সেখানে ছিলেন সিএনএন চ্যানেলের প্রধান জেফ জুকার, ছিলেন এবিসি নিউজ-এর উপস্থাপক জর্জ স্টেফানোপোলাস এবং ডেভিড মুয়ের, এনবিসি’র প্রেসিডেন্ট ডেবোরা টার্নেস এবং ফক্স নিউজ-এর চার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।
প্রত্যেকেই ভেবেছিলেন, আগামী দিনে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মসৃণ সম্পর্ক তৈরি হবে। আলোচনাও এগোবে সেই পথে। কিন্তু সেই আশায় পানি ঢেলে প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে যেভাবে রে রে করে উঠেছেন, তাতে স্তম্ভিত সকলেই। মার্কিন নির্বাচন সংক্রান্ত খবর যেভাবে সিএনএন এবং এনবিসি দেখিয়েছে, তা ট্রাম্পের মতে, ‘অন্যায্য।’ সিএনএন-এর প্রত্যেককে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে ঘোষণা করেনি তিনি।
এদিন ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন হোয়াইট হাউসে তাঁর সদ্যনিযুক্ত মুখ্য মন্ত্রণাদাতা স্টিফেন ব্যানন, চিফ অব স্টাফ রেইন্স প্রিবাস এবং তাঁর জামাই জ্যারেড কুশনারও। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দাবি, বৈঠকের প্রথম থেকেই যুদ্ধংদেহি মেজাজে ছিলেন ট্রাম্প। একের পর এক প্রতিনিধিকে লক্ষ্য করে তিনি বলে যান, ‘আপনারা কেউ আমার বক্তব্য বোঝেননি। আমার কথা আম মার্কিনদের মধ্যে ঠিকমতো পৌঁছে দেয়ার চেষ্টাও করেননি।’
ট্রাম্পের কথায়, ‘প্রচার পর্বে সাংবাদিকরা যা করেছেন, তাতে ন্যূনতম মানবিকতার ছাপ ছিল না।’
আক্রমণের নিশানা ছিল নিউ ইয়র্ক টাইমসও। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের হয়ে সওয়াল করছে এই দৈনিক— প্রচার-পর্বের গোড়া থেকেই অভিযোগ ছিল ট্রাম্পের। সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে এদিন এই কাগজের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। ট্রাম্প নিজেই পরে টুইট করেন, নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে পরিকল্পিত বৈঠক তিনিই বাতিল করে দিয়েছেন।
ট্রাম্পের দাবি, বৈঠকের বিভিন্ন শর্ত শেষ মুহূর্তে মানতে অস্বীকার করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। তাই এই সিদ্ধান্ত। মার্কিন দৈনিকটি অবশ্য ট্রাম্পের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। বৈঠক যে বাতিল হয়ে গেছে তা ট্রাম্পের টুইটের আগে পর্যন্ত তাঁরা জানতেনই বলে জানিয়েছেন ওই দৈনিকটির কর্তৃপক্ষ। যদিও প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট আরও একটি টুইটে জানান, ‘সম্ভবত পরবর্তীকালে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে বৈঠক হবে। কিন্তু ওরা হয়তো এইটুকু সময়ের মধ্যেও আমাকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচার চালিয়ে যাবে।’
নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতি সামান্য ‘সদয়’ হলেও ট্রাম্পের কোপে পড়েছে ওয়াশিংটন পোস্টও। প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট-এর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ তুলে চড়া দাগে প্রচার চালিয়েছে তারা। তাই তাদের সঙ্গে আর কোনো আলোচনায় যেতেই চান না তিনি।
সূত্র: আনন্দবাজার
Be the first to comment on "সাংবাদিকরা অসৎ, আক্রমণে ট্রাম্প"