নিউজ ডেস্ক : “সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার অভাবে উগ্র মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী দেশে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাও ঘটছে। এ পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে যুব সমাজের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে।”
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত যুব উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালায় বক্তারা এ আহ্বান জানান। ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা, সার্বজনীনতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর। বক্তব্য দেন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, এভারেস্ট জয়ী এম এ মুহিত এবং সাংবাদিক নিখিল ভদ্র।
বিএনপিএস’র উপপরিচালক শাহনাজ সুমীর সঞ্চালনায় কর্মশালার বিভিন্ন পর্বে আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিমউদদীন খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফসান চৌধুরী এবং অক্সফামের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার তারেক আজিজ। দিনব্যাপী কর্মশালায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বেগম রোকেয়া ইয়ুথ গ্রুপ, কাজী নজরুল ইসলাম ইয়ুথ গ্রুপ, নিশাত মজুমদার ইয়ুথ গ্রুপ, নুরজাহান বেগম ইয়ুথ গ্রুপ, ওয়াসফিয়া নাজরীন ইয়ুথ গ্রুপ, সিতারা বেগম ইয়ুথ গ্রুপ, রোকেয়া কবীর ইয়ুথ গ্রুপ, সুফিয়া কামাল ইয়ুথ গ্রুপ, সাকিব আল হাসান ইয়ুথ গ্রুপ এবং শিরিন বানু মিতিল ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী বলেন, “লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও এখনো মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’। কিন্তু এখনো আমাদের সাম্প্রদায়িক সহিংতার ঘটনা ঘটছে। এর বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মকে রুখে দাঁড়াতে হবে।” ধর্মীয় বিভেদ ভুলে মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে যুব সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চা বাড়াতে হবে। দেশের ইতিহাস-ঐহিত্যকে জানতে হবে। নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
এভারেস্ট জয়ী এম এ মুহিত বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের হাতে যে পতাকা তুলে দিয়েছেন তা সারা বিশ্বে তুলে ধরতে নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য’- এ চেতনাকে ধারণ করে মানুষের মুক্তির জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।” কর্মশালায় ‘বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতি, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক চেতনা, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও সার্বজনীনতা, বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজরীতি এবং ধর্মকেন্দ্রিক বৈষম্য বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
Be the first to comment on "‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ’"