নিউজ ডেস্ক : দেশে মোট ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ৫০২ মামলার জট রয়েছে উল্লেখ করা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, এসব মামলা জট কমাতে সন্ধ্যাকালীন আদালত চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে এই আদালত চালুর জন্য ১৭৩ জন বিচারিক কর্মচারী প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার সাভারে ‘অধস্তন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বিচারিক কাজের যথাযথ মূল্যায়ন এবং সাফর্য নির্ধারণের মানদণ্ড নিরুপণ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট। সুপ্রিমকোর্টের স্পেশাল অফিসার হোসনে আরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, হাইকোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ, মো. আজিজুল হক ও প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব আনিসুর রহমান। কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতোধ্যে বাংলাদেশ বার-কাউন্সিল ও আইনজীবী সমিতির সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এটা চালু করতে পারলে মামলার জট অনেকাংশে কমে যাবে বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক ইউএসএইড এর জাস্টিজ ফর অল (জেএফএ) প্রোগ্রামের সহযোগিতায় ব্র্যাক সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট (ব্র্যাকসিডিএম) অনুষ্ঠিত দুই দিন ব্যাপি এই অনুষ্ঠানে মোট ৮০ জন অধস্তন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের কর্মশালা চলবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল, ভারতসহ আরো কয়েকটি দেশে সান্ধ্যকালীন আদালত ব্যবস্থা চালু আছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রেও এই ব্যবস্থা চালু আছে বলে জানান তিনি।
এসকে সিনহা বলেন, বিচার সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার সুযোগ নিশ্চিত করে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশসমূহে এই অ্যাকাডেমি থাকলেও আমাদের দেশে এখনো অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের কাছে ৫০ একর জমি বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দিয়েছে উল্লেখ করে ইউএইসএইড কে এ ব্যাপারে সহায়তার আহ্বান জানান।
বিচার বিভাগে ডিজিটাইলেজশনের কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, সুপ্রিমকোট ও সাত বিভাগের অর্থাৎ ৬৫ জেলার বিচারিক কাজে ই-জুডিশয়ারি চালুর জন্য (৬৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার) সমান সাড়ে ৬ কোটি টাকা পাঁচ বছরের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আদালতে আধুনিক সাক্ষ্যগ্রহণ পদ্ধতি চালু, ৬৪ জেলার আদালতগুলোতে ইন্টারনেট সুবাধা দেয়ার জন্য ওয়াইফাই সেবা চালু করা, অনলাইন কজলিস্ট (মামলার তালিকা) পদ্ধতি, এবং কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সারাদেশের কারাগারগুলোতে বিডিও কনফারেন্সের আওতায় আনা। যাতে উচ্চ আদালতসহ দেশের সকল আদালতের পরিধি বাড়ে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতির বক্তৃতায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বাংলাদেশের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন । শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশে গণতন্ত্রের চর্চা হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
নির্বাচনের সহিংসতায় যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সঠিক চর্চা করার জন্য মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও সহিংসতা বন্ধ করতে সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সাধারণ মানুষকে এক সাথে কাজ করতে হবে।

Nice news media