নিজস্ব প্রতিবেদক: খালেদা জিয়ার মুখে ‘শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে’ আগামী নির্বাচনের কথায় প্রাণনাশের হুমকি দেখছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
দলের কাউন্সিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্য নিয়ে রোববার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় নিজের এই আশঙ্কার বিষয়টি প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাড়ি গণভবনে এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের পরবর্তী সম্মেলনে সাড়ে তিন মাস পিছিয়ে ১০ জুলাই নতুন দিন ঠিক হয়। শনিবার বিএনপির কাউন্সিলের রুদ্ধদ্বার অধিবেশনে খালেদা ‘শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়েই আগামী নির্বাচন হবে’ বলেছিলেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নিয়ে বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তব্যে এই প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “খালেদা জিয়া দেখলাম, হাসিনাবিহীন নির্বাচনের কথা বলেছেন।
“হাসিনাবিহীন নির্বাচন বলতে খালেদা জিয়া কী বোঝাতে চাইছেন? ২১ অগাস্টের মতো আবার গ্রেনেড হামলা বা আবার হত্যার পরিকল্পনা করছে কি না? সেটাই হচ্ছে আমার প্রশ্ন।”
“তার মানে আরও কিছু একটা ষড়যন্ত্রের ঘোঁট পাকাচ্ছে সে (খালেদা জিয়া)। কারণ, আর কোনো পথ তার (খালেদা জিয়া) নেই।”
খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ২০০৪ সালে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়, যাতে কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।
বিএনপি আমলে এর তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ উঠেছিল। পরে সিআইডির তদন্তে নানা ঘটনা বেরিয়ে আসে। শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার এই মামলায় আসামি এখন খালেদার ছেলে তারেক রহমানও।
ওই হামলার আগে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য মনে করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “যে পথে আমার বাপ গেছে, সে পথেই আমাকে যেতে হবে- এমন বক্তব্যও দিয়েছিল তারা।”
‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তো নয়ই বিরোধীদলীয় নেতাও হতে পারবে না’- প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যও মনে করিয়ে দেন শেখ হাসিনা।
“আমি আর রাজনীতি করতে পারব না। মানে, আমার অস্তিত্বই থাকবে না। এবং তারপরই হল ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা।”
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপি এখন সংসদেও নেই। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে নারাজ দলটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।
২০০০ সালে কোটালীপাড়ায় জনসভাস্থল থেকে বোমা উদ্ধারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “সে সময় একটা ৭৪ কেজি বোমা আরেকটা ৭৬ কেজি বোমা, দুটো বোমা পাওয়া গিয়েছিল।
“সেই সমাবেশে বোমা হামলার চক্রান্ত করা হয়েছিল। বিএনপি নেত্রী ও তার নেতারা একই বক্তৃতা দিয়েছেন। ২০০০ সালে আমাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় দিয়ে সরকার পতন করবে।”
ভয়াবহ ওই ঘটনা স্মরণ করে তিনি বলেন, “রাখে আল্লাহ মারে কে। আল্লাহ জীবন দিয়েছে, আল্লাহ কাজ দিয়েছে, যতক্ষণ কাজ শেষ না হবে, ততক্ষণ আল্লাহ হেফাজত করবে।
“দেশবাসীর জন্য কাজ করি। দেশবাসীর দোয়া আছে। দেশবাসীর কল্যাণের জন্যই আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখবে।”
বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার গুরুত্বও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
“অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি, তা অব্যাহত থাকা দরকার। সে সাথে সাথে আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।”
ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা আশা করি, গণতন্ত্রের যে চর্চাটা, সেটা তৃণমুল থেকে হয়ে আসুক। সেটাই আমরা ব্যবস্থা করছি। জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে, যে প্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের উন্নয়ন হবে।”
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুতেই সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে তার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ করেন।
Be the first to comment on "খালেদা জিয়ার কথায় ‘শঙ্কায়’ শেখ হাসিনা"