শিরোনাম

দুর্বল বাঁধই ক্ষয়ক্ষতির কারণ: মায়া

নিউজ ডেস্ক: জলোচ্ছ্বাসে দুর্বল বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানুর’র আঘাতে প্রাণহানি এবং সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

রোববার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘জেলা দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা সভায়’ তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের মানুষের লড়াইয়ের সাহস, সরকারের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, দলীয় কর্মী, পুলিশ, বিডিআর ও ফায়ার সার্ভিসের পরিশ্রম এবং আন্তরিকতা সব মিলিয়ে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কমিয়ে আনা গেছে।

“তবে দুর্বল বেড়ি বাঁধের কারণে জলোচ্ছ্বাস লোকালয়ে এসে মানুষের প্রাণহানির ঘটিয়েছে। বেড়ি বাঁধ ঠিক থাকলে ফসল, গবাদি পশু, খামার, ঘরবাড়ি ও মানুষের জীবনের অপচয় হত না।”

প্রধানমন্ত্রী বুলগেরিয়া থেকে ঝড়ের সম্পর্কে নিয়মিত খবর রেখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “যতটা আতঙ্ক ছিল, ক্ষয়ক্ষতি ততটা হয়নি।”

একটি মানুষও যাতে দুর্যোগে কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

শনিবার ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে গাছ ভেঙে ও বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়ে উপকূলীয় সাত জেলায় ২৪ জন নিহত হন। এর মধ্যে শুধু চট্টগ্রামেই নিহত হয়েছেন ১২ জন।

নোয়াখালীর হাতিয়ায় জোয়ারে ভেসে মা-মেয়েসহ তিনজন ও ফেনীর সোনাগাজীতে এক রাখাল,কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় চাপা পড়ে ও নৌকার ধাক্কায় তিনজন, ভোলার তজমুদ্দিন ও দৌলতখানে ঘরচাপা পড়ে তিনজন, পটুয়াখালীর দশমিনায় এক বৃদ্ধা এবং লক্ষ্মীপুর সদরে গাছ উপড়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

এছাড়া ঝড়ো বাতাসে পটুয়াখালীতে গাছ চাপায় আহত এক বৃদ্ধা রোববার মারা যান।

ঝড়ে চট্টগ্রাম, ভোলা ও পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার, চাঁদপুর, ঝালকাঠি, বরিশালসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও সম্পদেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সভায় উপস্থিত চট্টগ্রামের উপজেলা চেয়ারম্যানরা মন্ত্রীর কাছ থেকে সরাসরি ত্রাণ বরাদ্দ দাবি করেন।

আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও যারা রয়ে গেছে তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া আছে বলে সভায় জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন জানান।

সভায় চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন, সন্দ্বীপ, আনোয়ারা, বাঁশখালি ও পটিয়া উপজেলায় মোট ৬০ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে গেছে।

বাঁধ নির্মাণে নতুন করে ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, “আমাদের বেড়ি বাঁধগুলো ছিল ৬ দশমিক ৫ মিটার, কিন্তু জলোচ্ছ্বাসের সময় সাগরের পৃষ্ঠদেশের উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৫ মিটার। ফলে বাঁধগুলো জলোচ্ছ্বাসের ধকল নিতে পারেনি।”

এসময় মন্ত্রী বলেন, সাগরের উচ্চতা যেহেতু বেড়েছে নতুন করে বেড়ি বাঁধ করার সময় সেটা মাথায় রেখে শক্তিশালী করে নির্মাণ করতে হবে। তাহলে আমাদের প্রাণহানি আমরা আরও কমাতে পারব।”

সভার বিশেষ অতিথি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন শুকনো মৌসুমে বেড়ি বাঁধ নির্মাণের পরামর্শ দেন।

সভায় জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন ঝড়ে চট্টগ্রামের ক্ষয়ক্ষতি তথ্য তুলে ধরে জানান, চট্টগ্রামে মোট ১৫৫ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই হাজার ৫৪১ একর ফসলের জমি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মোট ১০৪ টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৮০ হাজার ৪০০ জন আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চার লক্ষাধিক।

basic-bank

Be the first to comment on "দুর্বল বাঁধই ক্ষয়ক্ষতির কারণ: মায়া"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*