বিশেষ প্রতিবেদক: না ৪ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্বে থাকা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে পূর্ণ মহাসচিব হবেন বলে দলের ভেতরে ও বাইরে গুঞ্জন ছিল। কিন্তু দলটির চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে যথাক্রমে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে পুনরায় নির্বাচিত করা হলেও ভারমুক্ত করা হয়নি ফখরুলকে।
ফলে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত মির্জা ফখরুলের কাঁধে মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হবে নাকি বিকল্প কাউকে খুঁজছেন খালেদা-তারেক এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। দলটির নেতাকর্মীদের মাঝেও এ নিয়ে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, কাউন্সিলের দিন বিএনপির পূর্ণ কমিটি ঘোষণা করা না হলেও মহাসচিবের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে এমন আলোচনা শোনা গেলেও এ বিষয়ে কোনো ফয়সালা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
ফখরুলকে মহাসচিব না করায় কাউন্সিল শেষে ঘরে ফেরার পথে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের মধ্যে অনেককে অাফসোস করতেও দেখা গেছে।
তবে মির্জা ফখরুলকেই মহাসচিব করা হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মহানগরের কয়েকজন নেতা।
এদিকে, কাউন্সিলে খালেদা জিয়ার সামনে বক্তব্য দেয়ার সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৈমুর রহমান মির্জা ফখরুলকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব থেকে ভারমুক্ত করার দাবি করেন।
পাশাপাশি বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও ফখরুলকে ভারমুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেক কাউন্সিলর খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে এও বলেন, ‘ম্যাডাম বিএনপির মতো জনপ্রিয় একটা দলকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দিয়ে চলতে হয় এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়।’
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, মহাসচিব পদে নিয়োগের বিষয়টি চেয়ারপারসনের একান্তই নিজস্ব ব্যাপার। তাই এ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে তিনি মনে করেন সময় ক্ষেপন করে হলেও মির্জা ফখরুলকেই মহাসচিব করা উচিত।
অন্যদিকে, সদ্য সমাপ্ত কাউন্সিলে পরোক্ষভাবে বেশ কয়েকজন নেতাকে ফখরুলের বিরুদ্ধে কৌশলে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।
রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে বরিশাল জেলা (উত্তর) সাধারণ সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, ‘আমরা শুধু মহাসচিব চাই না। এমন একজন অভিভাবক চাই, যিনি ডাক দিলে ইউনিয়ন থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত লাখ লাখ নেতাকর্মী রাজপথে নেমে আসেন।’
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির ইতিহাসে মহাসচিব পদে কোনোদিন প্রার্থী হয়নি, এবারও নেই এমন দাবি করে সময় নিয়ে মহাসচিব পদসহ নির্বাহী কমিটির নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রস্তাব করেন যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘যত দূর জানি কাউন্সিলের আগেই ফখরুলকে পূর্ণ মহাসচিব করার কথা ছিল। তবে সেদিন কেন মহাসচিবের নাম ঘোষণা করা হয়নি তা বলতে পারছি না।
স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারও মনে করেন, চেয়ারপারসন পদে নির্বাচনের পর ম্যাডাম ইচ্ছা করলে যে কাউকে যে কোনো পদে নিয়োগ দিতে পারেন। তার মতে, অনেকের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও আপাতত ফখরুলকে চেয়ারপারসন বাদ দেবেন না। তাকেই মহাসচিব করা হবে; তবে সেটা যেকোনো সময় হতে পারে।
Be the first to comment on "ফখরুলকে ভারমুক্ত না করায় কৌতুহল"